মধ্যরাত থেকে ভোলায় মাছ শিকার শুরু

ভোলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২২, ০৬:২৯ পিএম

মাছ শিকারের জন্য প্রস্তুত জেলেরা। ছবি: ভোলা প্রতিনিধি

মাছ শিকারের জন্য প্রস্তুত জেলেরা। ছবি: ভোলা প্রতিনিধি

দুই মাস বন্ধ থাকার পর আজ মধ্যরাত থেকে মাছ শিকার শুরু করবে ভোলার জেলেরা। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার মার্চ-এপ্রিল দুই মাসব্যাপী দেশের ছয়টি অভয়াশ্রমে সকল প্রকার মাছ শিকারে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ এপ্রিল রাত ১২ টার পর। 

জেলেরা দুই মাস তাদের নৌকা মেরামত আর জাল বোনাসহ অন্যান্য কাজে সময় ব্যয় করেছে। এখন জোরে-শোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে মাছ শিকারে নামার। তবে তাদের দাবি বেশিরভাগ জেলেই সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ শিকার থেকে বিরত থেকেছে কিন্তু বিনিময়ে সঠিক মতো প্রণোদনা পায়নি। বরং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্র-ছায়ায় অনেক জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকার করেছে।

ইলিশ এবং অন্যান্য মাছ যাতে অবাধে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য সরকার মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অন্য অভয়াশ্রমের মতো ভোলার তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তমের ১০০ কিলোমিটার এবং মেঘনার ইলিশা থেকে চরপিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এলাকার দুটি অভয়াশ্রমেও সকল ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ছিলো। 


এই দুই মাস জেলেরা নৌকা তৈরি, মেরামত ও জাল বোনাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিল। এখন নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ায় তাদের মাঝে তোড়-জোড় চলছে মাছ শিকারে নামার। ঈদ সামনে রেখে উৎসব মুখর পরিবেশে মাছ শিকারে নামতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা। যদিও ভোলা জেলায় মৎস্য বিভাগের নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১লাখ ৪৬ হাজার। তবে নিবন্ধন এর বাইরে রয়েছে আরো অন্তত দুই লাখ জেলে। এদের অধিকাংশই নিষিদ্ধকালীন সময়ে মাছ শিকারে নামেনি। জেলেদের দাবি মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য তারা কোনো প্রণোদনা বা সহায়তা পায়নি। বরং প্রভাবশালী নেতা এবং প্রশাসনের ছত্র ছায়ায় এক শ্রেণির অসাধু জেলে ও ব্যবসায়ীরা চাপলি নামে পরিচিত কোটি কোটি ইলিশের বাচ্চা ধ্বংস করে ফেলেছে।

জেলে মনির মাঝি বলেন, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞায় আমরা নদীতে মাছ শিকার করতে পারিনি। এখন অভিযান শেষ হয়েছে আমরা মাছ ধরা শুরু করবো।

জেলে সাইফুল ফরাজি বলেন, এ দুই মাসে আমাদের অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতে হয়েছে। সরকার চালসহ আমাদেরকে যে প্রণোদনা দেওয়ার কথা ছিল তার কিছুই আমরা পাইনি। এখন মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। যদি মাছ ঠিকঠাকমতো পাই তাহলে ভালোভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবো।


ইসমাইল মাঝি বলেন, প্রত্যেকবারই আমরা অভিযান ঠিকমত পালন করি। এবছরও অভিযানের দুই মাস আমরা নৌকা ও জাল উপরে রেখেছি। কিছু প্রভাবশালী জেলে অবৈধ জাল ব্যবহার করে নদীতে মাছ শিকার করেছে। 

ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, এ নিষিদ্ধকালীন সময়ে জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার কারণে নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাবে এবং জেলেদের মুখে হাসি ফুটবে।

নিষেধাজ্ঞার দুই মাসে ৪ শত অভিযানে ৮ শত ৯৭ জনকে আটক করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে ১ শত ১২ জনকে কারাদণ্ড ও বাকিদের কাছ থেকে প্রায় ২৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh