বিধবা ব্যবচ্ছেদ

মৌসুমী বিলকিস

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২২, ১১:৫৫ এএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

তার আত্মাকে টানতে টানতে যখন শুইয়ে দেওয়া হলো হনন-প্রয়াসে বিশেষভাবে রচিত এক সূচিমুখ শয্যায়, তখনো আত্মার ভেতর জেগে ছিল পরিপূর্ণ দেহ। ফলে আঘাতের তীব্রতা ছিল গুরুতর আর তা জানত সেইসব দুষ্কৃতরা যারা নিজেদের ‘বন্ধু’ বা ‘আত্মীয়’ বলে পরিচয় দিয়েছিল, জীবনের কোনো এক প্রারম্ভিক মুহূর্তে। 

দুষ্কৃতদের উদ্দেশ্য ছিল নির্ভেজাল বেদনার স্রোত বইয়ে দিয়ে, তার আত্মার ভেতর জীবনের সমস্ত লক্ষণ বিযুক্ত করে লুটপাটে প্রবৃত্ত হওয়া যাতে শ্রম ও সম্পর্কহীন (ফলে বেআইনে প্রাপ্ত) অর্থ ও সম্পত্তি এবং এক ধরনের অমানবিক তীব্র উল্লাসের তৃপ্তিতে অংশ গ্রহণ। 

ফলে বেদনার অন্তর্লীন মুহূর্তে সদ্য বর হারানো মেয়ে, তীব্র চিৎকারের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলা মেয়ে, এক নিকষ অন্ধকারের ভেতর পাক খেতে খেতে গভীর খাদের অতলে ডুবে যেতে থাকে আর সূচিমুখ শয্যার হৃদয় ভিজতে থাকে তার রজ ও কামরসে। 

হ্যাঁ, সেই কামরস যা সে জমিয়ে রেখেছিল প্রবল আদর-মুহূর্তের অপেক্ষায়; এখন, আশ্চর্যজনকভাবে বরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত অশ্রু প্রবাহে পাল্লা দিয়ে কামরসের স্রোত তাকে এক নিরলম্ব অনুভূতির দিকে ঠেলে দেয়, অথচ সে একবারও অনুভব করে না সঙ্গমের ইচ্ছে এবং এই নিরবচ্ছিন্ন তরল প্রবাহের নিগূঢ় রহস্য কিছুতেই তার বোধের সান্নিধ্যে ধরা দেয় না। বস্তুত ‘বোধ’ নামের বিবর্তিত মনুষ্য অনুভূতির জটিল জালিকায় আটকে পতঙ্গ সদৃশ এক রূপান্তরের অধীন সে, যেন বা গ্রেগর সামসা ভর করে আছে তার চরাচরজুড়ে। 

সূচিমুখ শয্যার সূচসকল ধারণ করে আছে তার আত্মা থেকে প্রবাহিত তরল আর শয্যার ভিত থকথকে কালচে লাল প্রবাহে মাখামাখি হয়ে পদদলিত অথচ উড্ডীন-চেষ্টাকৃত একখণ্ড কাপড়ের আকার নিয়েছে যে কাপড়ের রঙ ঢেকে দিয়েছে তার সারা শরীর (যা তারা নগ্ন করে দিয়েছিল) এবং এক্ষুণি যেন বা খোলা আকাশের দিকে উড়ে যেতে প্রস্তুত আর যার সঙ্গে উড়ে যাবে তার এই পার্থিব দেহ ও অপার্থিব আত্মাও। 

বেদনায় জাড়িত হতে হতে, বেদনার অন্তরের বেদনা টের পেতে পেতে, বিষাদ মথিত অনুভূতি সকল প্রতিটি রোমকূপের ভেতর শুষে নিতে নিতে মেয়েটি তার দুষ্কৃত-বিক্ষত যোনি তাক করে দেয় মানব সভ্যতার দিকে আর উল্লাসে ফেটে পড়ে গণআন্দোলন এবং গণসাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং মৌলবাদী দলের সদস্যবৃন্দ আর মেয়েটির আত্মা স্পর্শ করে মৃত বরের জাগ্রত আত্মাসদৃশ স্পর্শকাতর এক অনুভূতি এবং মহাকাশের এক হিম নির্বাণের ভেতর মিলিয়ে যেতে চাই এই যুগল দ্রোহ। 

মহাকাশের অন্য গ্যালাক্সির অন্য তারা ও গ্রহ-উপগ্রহসকল এগিয়ে যায় সহস্র আলোকবর্ষ আর পৃথিবীর সময় আটকে থাকে একটি ক্ষণের ভেতর। 

ফলে, দুষ্কৃত-কাল আর শেষ হতে চায় না, ফলে তাক করা যোনি এক প্রবল সংকটের মুখে ফেলে দেয় পৃথিবীর সন্তানদের, কেননা সেই যোনি ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হতে থাকে এবং সংকুচিতও এবং আবার প্রসারিতও। দুষ্কৃতসকল আঙুল উঁচিয়ে স্বরের নানান ওঠাপড়ায় কিচিরমিচির জুড়ে দেয়- 

‘ও কোনোদিন স্বামীর সঙ্গে থাকেনি! আর এখন স্বামীর সম্পত্তির ভাগ নিতে আসছে! ভাগ শালী!’

কথা সত্য বটে, তবে অর্ধ সত্য। বেশ কিছু বছর একসঙ্গে থাকতে থাকতে প্রতিদিনের মলিন ও অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার পেতে তারা আলাদা থাকা শুরু করে এবং ম্যাজিক! প্রায় প্রেমিক-প্রেমিকার মতো হয়ে যায় সম্পর্ক; ‘প্রায়’, কেননা প্রেমিক-প্রেমিকা সদৃশ সম্পর্কে ভবিষ্যতের মলিন-একঘেয়ে জীবনের যে বীজ লুকিয়ে থাকে তা তারা পেরিয়ে এসেছে; কিন্তু নিজেদের সম্পর্কের কৈফিয়ত এই দুষ্কৃতদের দিতে যাবে কেন সে? বিশেষ করে বরের জীবিত থাকাকালীন হলে সে হতো দ্বিপক্ষীয়, এখন একপক্ষীয় কৈফিয়তের কোনো অর্থই নেই; কেননা যে যার সীমিত ধারণায় কিছু একটা ধারণা আঁকড়ে ধরে বিধবা-নিধনযজ্ঞে নেমেছে এবং সেই ধারণা বহু সহস্র বছর পিছিয়ে থাকার শামিল, এই ধারণা নির্মূলের ক্ষমতা বা ইচ্ছে কিছুই নেই মেয়েটির। ফলে অনেক রক্তপাত ও যন্ত্রণা অতিক্রম করে বর ও বাবার সম্পত্তিতে মেয়েদের অধিকার কিছুতেই স্বাক্ষর করতে পারে না দুষ্কৃত দল এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে নিজেদের অধিকার জোর করে বহাল করার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হয়। 

‘দেখ দেখ, নিজে হাত-পা ছেড়ে থাকবে বলে সন্তান নেয়নি, মা হতে চাইনি কখনো! কি স্পর্ধা! আমরা কি ছেলেপুলের মা-বাবা হইনি? আমরা কি দায়িত্ব নিইনি? দায়িত্ব-টায়িত্ব বোধই নেই ওর, সন্তান কেন নেবে? একা একা থেকে উচ্ছনে গেছে! সমাজ-টমাজ বলে কিছু নেই, নাকি?’

মা না হওয়ার সিদ্ধান্ত প্রাথমিকভাবে তার একার থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছিল যুগ্ম। ফলে এসব উত্তর তৃতীয় কাউকে দেওয়ার কোনো দায় নেই মেয়েটির এবং সন্তান ধারণের অধিকার কারও থাকলে সন্তান না-ধারণের অধিকারও আছে কারও কারও; যেমন যুগল বিবাহিত জীবনে থাকার অধিকার আছে অনেকের, তেমন একাকী থাকার অধিকারও আছে কারও কারও। 

‘যার তার সঙ্গে শুয়ে পড়ে, বুঝলে? একেবারে বেশ্যা! দেখো না, কেমন কেমন পোশাক পরে! শরীর ঢেকে রাখার কোনো ইচ্ছেই নেই! কী অসভ্য মেয়ে রে বাবা! ওর জীবনটাই পুরো সেক্স! বুঝলে? আমাদের শালা;’ 

থেমে গেলেন কেন? আপনাদের খুব খারাপ সেক্স লাইফ, বোঝাই যাচ্ছে। ফলে, আপনারা যৌনতা ছাড়া কোনো মেয়েকে দেখতেই পারেন না। ছেলেমেয়ে একসঙ্গে দেখলেই ধারণা করে নেন এদের মধ্যে বন্ধুত্ব নয়, যৌনতার সম্পর্ক। মেয়ে-মেয়ে, ছেলে-ছেলেতেও যৌনতার সম্পর্ক হয়, জানেন? যৌনতা বিষয়টিকে সম্মান করুন, সম-লিঙ্গ প্রেমকেও। মানুষে মানুষে সম্পর্ক কখন কীভাবে কোন দিকে গড়াবে সে এক জটিল বিষয় এবং মানব শরীর ও অনুভূতির ও প্রজননের বিবর্তনের সঙ্গে জড়িত তা, এবং তার ব্যতিক্রমও প্রকৃতিতেই; খণ্ডাবেন কী করে?

মেয়েটি ভাবে, বরের সঙ্গে তার সম্পর্ক ধ্রুব থাকলেও বর বা সে অন্য কারোর দিকে আকৃষ্ট হয়নি তা একেবারেই নয় এবং সে আকর্ষণের প্রাথমিক খবর নিজেরাই নিজেদের দিয়েছে এবং সেসব তাদের সম্পর্ক খারাপের কারণ হয়ে ওঠেনি কখনো; কেননা, যারা প্রচলিত প্রথাগুলোর দিকে আঙুল তুলতে চাই তারা এক নারী-এক পুরুষ, এক নারী-এক নারী, এক পুরুষ-এক পুরুষ সমীকরণের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেবে সেটাই স্বাভাবিক; নয় কি? সে যদি না বোঝেন তাহলে আপনারা কোনো আন্দোলনের অংশ কখনো হতে পারেননি, রাস্তায় নেমে চ্যাঁচালেই কি সব উত্তীর্ণ হয়, নিজের জীবনের দিকে তাকাতে হয় না? 

আর বোরকা বা বিকিনি, কে কী পরবে নিজেরাই ঠিক করে নেবে, আপনারা মাথা গলাবেন না দয়া করে এবং ‘যার তার সঙ্গে’ যৌনতায় ঢোকা যায় না, বিষয়টা এত সোজা নয়, বেশ জটিল। 

এইসব কতবার ভেবেছে মেয়ে, ওদের সব কথাই কানে এসেছে, শোনার ইচ্ছে না থাকলেও কেউ না কেউ ঠিক কানে ঢুকিয়েছে। 

উত্তর কী দেবে? না, থাক। লাভ নেই। মনুর সন্তানরা মনুর ছাঁচ অনুসরণ করবে, সেটাই স্বাভাবিক। কেন বৃথা শক্তি অপচয় করবে মেয়ে? 

সদ্য বর হারিয়ে নিরন্তর হাহাকারের মধ্যেও বহিরাগত মানসিক আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হলেও এই শারীরিক আক্রমণ ঠেকানো, সে যে অসম্ভব! 

আপাতত, মেয়েটির কানে এদের কিচিরমিচির পিছলে ফিরে যেতে থাকে দুষ্কৃতদের কানের ভেতর আর মেয়েটির কানে বাজতে থাকে সুদূর ভবিষ্যতের এক সুর যে ভবিষ্যতে পৌঁছতে পৃথিবীর লেগে যেতে পারে কয়েক কোটি বছর অথবা কোনোদিন সেই ভবিষ্যৎ দেখার বা শোনার সুযোগই হবে না পৃথ্বী সন্তান দলের। 

এখন সেই দুষ্কৃত দল মেয়েটির যোনির দিকে বিহ্বল হয়ে তাকিয়ে থাকে এবং তাদের রসনা লকলক করে এবং তাদের পুরুষাঙ্গ লাফিয়ে ওঠে আর ওদের দলের মেয়েরা প্রবলভাবে খুঁচিয়ে তুলতে থাকে পুরুষদের এবং নিজেরাও সশস্ত্র হয়ে ওঠে, মেয়েটির বিক্ষত যোনি আরও বিক্ষত করার উদ্দেশে; কিন্তু হা-মুখ পুরুষরা যোনির কাছাকাছি পৌঁছনোর হুড়োহুড়ি-মারামারি প্রবল বিশৃঙ্খলার মধ্যে স্খলিত হতে থাকে আর এত পুরুষের রেতঃপাতে জায়গাটা পিচ্ছিল ও চটচটে হয়ে ওঠে, এরেন্দিরার বিছানার থেকেও সহস্র গুণ বেশি চটচটে এবং সে তরলে গলা পর্যন্ত ডুবে যেতে থাকে তারা আর মহিলারা কেউ কেউ উৎকট গন্ধে বমনে উদ্যত হয় এবং বর হারানো মেয়েটি এসব কিছুই টের পায় না, কেননা সে আগেই পৌঁছে গেছে বাস্তব অনুভূতি থেকে অনেক অনেক দূরের কোনো অনুভূতি প্রদেশে। 

দুষ্কৃত দল ও তাদের মহিলারা দেখে মেয়েটির মুখে লেগে আছে অদ্ভুত প্রশান্তি এবং এই রেতঃপ্রদাহ তার শরীর ছুঁয়ে ছড়িয়ে থাকা উদ্ধত রজঃ-পতাকা স্পর্শ করতে পারছে না উপরন্তু তার যোনি ক্রমাগত প্রসারিত হতে হতে এত বিশাল আকার ধারণ করেছে যে সমগ্র মানব সভ্যতা ঢুকে যেতে পারে তার অন্দরে। ফলে দুষ্কৃতদের রাগ উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকে এবং কোনোরকমে রেতঃপ্রদাহ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়ে বাঁশ-চ্যালা কাঠ-তীর-ধনুক-গাদা বন্দুক-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র-পেটো ও পরমাণু ও হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেন বোমা-মহামারি বীজাণু ইত্যাদি প্রভৃতি যা যা সম্ভব সব নিয়ে উপস্থিত হয় যোনির সম্মুখে এবং নিজেদের যাবতীয় মেধা ও অর্থ ব্যয় করে মেয়েটির যোনি-শায়েস্তা অভিযানে এবং এটিই মানব সভ্যতার সব থেকে বৃহত্তর, স্বতঃস্ফূর্ত ও সর্বজনীন আন্দোলনের তকমা পেয়ে যায় পৃথিবীর তাবড় তাবড় মিডিয়ার দৌলতে।  

মেয়েটির আত্মা বরের আত্মাসদৃশ যে অনুভূতি স্পর্শ করে আছে সেই যুগল মহাকাশের কোনো এক উষ্ণ-শীতল গ্রহের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে যেটা আসলে সেই ভবিষ্যৎ যা তারা চেয়েছিল যুগ্মভাবেই এবং এখন যা তারা পেতে পারে কোনো পারিপার্শ্বিক শর্ত ছাড়াই, কোনো দুষ্কৃত দলের অবিরত বিদ্বেষ-মন্তব্য বা নৃশংস অত্যাচারের সম্ভাবনা ছাড়াই, আপাত নিরীহ ও ভদ্র সন্তানদের তির্যক মন্তব্য ও মন্ত্রণা ছাড়াই, টেনে টেনে পাঁকে নামিয়ে আনার নিরন্তর প্রয়াসকে প্রতিহত করার চেষ্টা ছাড়াই, লিঙ্গ সম্পর্কিত বিদ্বেষ-বচন ছাড়াই। 

কিন্তু মেয়েটি তার ক্ষীণতর হতে থাকা জাগরণ প্রয়াস থেকে অনুভব করে সেই রাঙা উদ্ধৃত পতাকাই তার পালক-সদৃশ শরীর বয়ে নিয়ে যাচ্ছে অভিকর্ষ ছাড়িয়ে মহাকর্ষের দিকে, মেয়েটি শব্দ শুনছে পতপৎ, পৃথিবীর হাওয়া অতিক্রম করে সেই শব্দ এক মহাজাগতিক নৈঃশব্দ্যে রূপান্তরিত হয়, কিন্তু তারও এক অনুভূতি আছে, কান দিয়েই ধরতে পারছে মেয়ে এবং তার শরীর বেষ্টন করে রজঃপতাকা ফুলের অসমান পাপড়ির মতো বহুধা বিভক্ত হয়ে খুব ধীর লয়ে এলোমেলো ছড়িয়ে পড়ছে ‘না-বাতাসে’। 

পৃথিবীর দুষ্কৃত-দল এক ভয় ও সমীহ নিয়ে সেই দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকে, যেন বা আদিম মানুষ জন্ম দিচ্ছে এক দেবীর, যেন বা ভেনাস জন্ম নিচ্ছে ভবিষ্যতের গর্ভে, পৃথিবীর মানুষগুলোর দেহ সাষ্টাঙ্গে প্রণামের ভঙ্গিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং উঠে দাঁড়ায় দু’পায়ে ভর করে, যেন বা সদ্য প্রাগৈতিহাসিক মেজোজোয়িক-কল্প যুগ শেষ করে সবে দু’পায়ে ভর করে দাঁড়াতে শিখল মানুষের পূর্ব আত্মীয় ‘প্রায়-মানব’, বিবর্তনের ধারায় ‘হোমো স্যাপিয়েন্স’ হতে এখনো তাদের সার্ধ-দুই লাখ বছর বাকি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh