সেতুর মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ
দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২২, ০৩:২১ পিএম
সেতুর মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ। ছবি: গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) নির্মিত সেতুর মুখ বন্ধ করে বসতবাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কাশিয়ানী উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে গোয়ালগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের ইমরান শেখ সেতুমুখ বন্ধ করে বসতবাড়ি নির্মাণ করছেন। এতে ওই এলাকার প্রায় ১৫০ বিঘা ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
তারা অতি তাড়াতাড়ি নির্মাণকাজ বন্ধ করে এলাকার কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
পদ্মবিলা গ্রামের মশিউর রহমান, গোয়াল গ্রামের মাসুদ শেখসহ আরো কয়েকজন কৃষক বলেন, গোয়ালগ্রাম-পদ্মবিলা সড়কের গোয়ালগ্রাম পশ্চিমপাড়া চাঁন মিয়ার বাড়িসংলগ্ন সেতুর মুখ বন্ধ করে এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটছেন ইমরান শেখ। সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন তিনি। তাদের দাবি, বসতবাড়ির নির্মাণ করা জমির মধ্যে সরকারি খাস জমিও রয়েছে; কিন্তু জমির মালিক প্রভাব খাটিয়ে সবার কথা অগ্রাহ্য করে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
গোয়ালগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর বলেন, ‘সারাবছর বিলের পানি এ সেতুর নিচ দিয়ে ওঠা-নামা করে। সেতুর মুখ বন্ধ করে বসতবাড়ি নির্মাণ করায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এতে গোয়ালগ্রাম ও পদ্মবিলা গ্রামের ১৫০ বিঘা জমিতে পানি যেতে পারবে না। ফলে বৃষ্টির পানি জমে শুস্ক মৌসুমে ওই সব জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। এতে চাষাবাদ ব্যাহত হবে।’
এতে করে এলাকার কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এলাকার কৃষকরা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয় তাই বাড়ি নির্মাণকাজ বন্ধ করে পানি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি ।
এ বিষয়ে জমির মালিক ইমরান শেখ সেতুর মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সেতু বন্ধ হলে আমার কিছু করার নেই। সেতুর মধ্যে আমার জমি রয়েছে। আমি আমার নিজের জমিতে বাড়ি করছি। আমার পাশেই অনেকে খাস জমিতে বাড়ি-পুকুর তৈরি করেছেন। তাদের কেউ কিছু বলেন না। এখন সেতু কোনো কাজেও আসে না। তাই আমি অকার্যকর সরকারি সেতুর মুখ বন্ধ করে দিয়েছি। সেতু বন্ধ করে দিয়ে সেখানে বসত ঘর বানাচ্ছি।’
এ প্রসঙ্গে মাহমুদপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. দাউদ হোসেন বলেন, মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর, সাতাশিয়া ও গোয়ালগ্রামে এ ধরনের সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যার সমাধান আমাদের কৃষি বিভাগের হাতে নেই। তাই ভুক্তভোগী তিন গ্রামের কৃষককে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে। তবে ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) চাইলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তা হলেই কৃষকরা জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবেন ও কৃষি উৎপাদন ঠিক রাখা সম্ভব হবে।
কাশিয়ানী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.মোরশেদুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোনো আমরা অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাওয়া মাত্র অভিযান পরিচালনা করব। তবে কেউ অবৈধভাবে সেতুর মুখ বন্ধ করে রাখতে পারবে না। কৃষিকাজের প্রয়োজনে এগুলো অবমুক্ত করে দেওয়া হবে অবশ্যই।