স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২২, ১১:৫৭ এএম
খেলার মাঝেই গোড়ালির চোটের কারণে মাঠেই শুয়ে পড়েন আলেকজান্ডার জেরেভ। ছবি: এপি
ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে পৌঁছে গেছেন রাফায়েল নাদাল। এবারের ১৪তম আসরে সেমিফাইনালে জার্মান তারকা আলেকজান্ডার জেরেভের মুখোমুখি হয়েছিলেন নাদাল।
গতকাল শুক্রবার (৩ জুন) প্যারিসে নাদাল ও জেরেভ ফাইনালের লড়াইয়ে কোর্টে নামেন। নাদাল ফাইনালে গেলেও তিনি উচ্ছ্বসিত ছিলেন না। কারণ, ম্যাচের দুই সেট শেষ হওয়ার পর গোড়ালির চোটের কারণে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েন জেরেভ। এই জার্মান তারকা এতো ভয়াবহ চোট পান যে তিনি আর খেলায় ফিরতে পারেননি।
দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে গতকাল জেরেভের মুখোমুখি হন নাদাল। গোটা ম্যাচ খেলে জয়ী হয়ে ফাইনালে উঠতে পারলে এই টেনিস তারকা খেলোয়াড় হয়তো আরো বেশি আনন্দিত হতেন।
তবে ম্যাচের প্রথম তিন ঘণ্টা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেন এই দুই টেনিস তারকা খেলোয়াড়। তিন ঘণ্ট পর হঠাৎই খেলার মাঝে কোর্টে শুয়ে পড়েন জেরেভ। আঘাত এতটাই গুরুতর যে তিনি আর দাঁড়াতেই পারছিলেন না।
শেষ পর্যন্ত হুইলচেয়ারে বসিয়ে কোর্ট থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরে যখন কোর্টে ফিরলেন; তখন একা একা আর হাঁটতে পারছিলেন তিনি। হাঁটছিলেন ক্র্যাচে ভর করে। যন্ত্রণায় বিদ্ধ মুখ, চোখের কোণ
নাদালও হয়তো ভাবতে পারেননি, এমন একটা পরিস্থিতির শিকার হবেন। প্রথম সেট গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। ৭-৬ গেমে প্রথম সেট জেতেন নাদাল। দ্বিতীয় সেটও গড়ায় টাইব্রেকারে। সেটের ফল যখন ৬-৬, তখনই চোট পান জেরেভ। একটি বল ঝুঁকে পড়ে রিটার্ন করতে গিয়েই গোড়ালি উল্টে যায় তার। সঙ্গে সঙ্গেই র্যাকেট ফেলে কোর্টে শুয়ে পড়েন তিনি। ১৫ হাজার দর্শক তখন প্রায় থমকে দাঁড়িয়েছিল এই দৃশ্য দেখে।
জেরেভকে এভাবে পড়ে যেতে দেখেই কোর্টের অপর প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছিলেন নাদাল। মাঠের ধারে যখন জেরেভকে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ডাক্তার-ফিজিওরা, তখন তিনি ঠায় দাঁড়িয়ে পাশে। ডাক্তার এবং ফিজিওদের সাহায্যে কোনোমতে হুইলচেয়ারে বসানো হয় জেরেভকে। লকার রুমে চলে যাওয়ার পর নিজের আসনে গিয়ে বসে পড়েন নাদাল। আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার জন্যে তখন অপেক্ষা করছেন আম্পায়ারও।
প্রায় সাত মিনিট পর বেরিয়ে এলেন জেরেভ, দুই বগলের নীচে ধরা ক্র্যাচ। পাশে কোচ, ফিজিও, ডাক্তার। ছলছলে চোখ, তবু আবেগ চেপে রাখার চেষ্টা তার। তখনেই ছুটে গেলেন নাদাল। জড়িয়ে ধরলেন জেরেভকে। ততক্ষণে ১৪তম ফরাসি ওপেন ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে নাদালের।
নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে নাদাল বললেন, ‘এমন ঘটনা মেনে নেওয়া সত্যিই কঠিন। তার জন্যে প্রচণ্ড খারাপ লাগছে। প্রতিযোগিতায় অসাধারণ খেলছিল। তাই তার মতো ছেলেকে কাঁদতে দেখা নিঃসন্দেহে কঠিন মুহূর্ত। আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। অনেক শুভেচ্ছা থাকল তার প্রতি।’