ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২২, ০১:৪৭ পিএম
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে শনিবার বিক্ষোভ হয়। ছবি : রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীদের গুলিতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, বিশেষ করে কিশোরদের হামলায় স্কুলে বহু শিশু হতাহতের দুটি ঘটনার পর অবশেষে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে সম্ভাব্য একটি আইন প্রণয়নে একমত হয়েছে সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের নিয়ে গঠিত একটি আন্তঃদলীয় গ্রুপ।
এতে ২১ বছর বয়সের নিচে কেউ আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করতে গেলে তার অতীত জীবন খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা চালু করা এবং অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বেচাকেনার ব্যাপারে কঠোর হওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
আন্তঃদলীয় গ্রুপটি ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলে এলেও তাতে সবসময় রিপাবলিকানদের বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার ১০ জন রিপাবলিকানের সমর্থন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রস্তাবগুলো রিপাবলিকান দ্বারা সমর্থিত হওয়ার অর্থ হলো সেটিকে আইনে রূপান্তরিত করার মতো যথেষ্ট ভোট রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এটি সঠিক দিকে অগ্রসর হওয়া; কিন্তু অস্ত্র সহিংসতা কমাতে যা দরকার তার চাইতে অনেক কম।
এর আগে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন পাশের চেষ্টা কংগ্রেসে পর্যাপ্ত ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছে।
বন্দুকধারীদের গুলিতে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের পরপর দুটো ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন আরো কঠোর করার দাবিতে গত শনিবার (১১ জুন) হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বহু মানুষ ব্যক্তিগত অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারান। তাদের একটি বড় অংশ শিশু যারা নিজের স্কুলেই প্রাণ হারান। আর
বেশিরভাগ সময় স্কুলে হামলায় জড়িতরা কিশোর বয়সী।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে গত ২৪ মে টেক্সাসের ইউভ্যালডে এলেমেন্টারি স্কুলে এক বন্দুকধারীর নির্বিচার গুলিতে ১৯ শিশু ও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিউইয়র্কের বাফালো শহরের একটি সুপারমার্কেটে আরেক ঘটনায় নিহত হয় ১০ জন। ২০১৮ সালে পার্কল্যান্ডের একটি স্কুল শুটিংয়ে ১৪ জন শিক্ষার্থী ও তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছিলেন। ২০১২ সালে কানেকটিকাটের স্যান্ডি হুক এলেমেন্টারি স্কুলে হামলায় ছয়-সাত বছর বয়সী ১২ শিশুসহ ২৬ জন নিহত হয়েছিল।
এ রকম বহু ঘটনার নজির যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির একটি বড় অংশ। অস্ত্র রাখার অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা অত্যন্ত ক্ষমতাধর। বহু বছর চেষ্টা করেও দেশটিতে কোনো প্রশাসন এ ব্যাপারে একটি কঠোর আইন প্রণয়নে সমর্থ হয়নি। মে মাসের দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রণয়নে আবারো নতুন করে দাবি উঠেছে।
সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের নিয়ে গঠিত আন্তঃদলীয় গ্রুপ এক বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিন শিশুদের নিরাপত্তা দিতে, স্কুলগুলো নিরাপদ করতে, দেশব্যাপী সহিংসতা কমাতে আজ আমরা একটি কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন দ্বিপক্ষীয় প্রস্তাব ঘোষণা করছি। আমাদের পরিবারগুলো আতঙ্কিত ও সমাজে নিরাপত্তাবোধের অনুভূতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য কিছু একটা করতে একত্রিত হওয়া আমাদের দায়িত্ব।
মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, স্কুলে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ বাড়ানো, সেই সাথে পারিবারিক সহিংসতার দায়ে সাজা ভোগকারী এবং কারো কাছ থেকে দুরে থাকার জন্য আদালতের আদেশ বা রেস্ট্রেইনিং অর্ডার যেসব ব্যক্তিদের উপর রয়েছে অস্ত্র ক্রয়ের সময় তাদের অতীত ইতিহাস তদন্ত করার পর তা ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার আহবান জানিয়েছেন তারা। -বিবিসি