ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২২, ০৩:৫৪ পিএম
ময়মনসিংহ জেলার মানচিত্র
ময়মনসিংহে জাতীয় ফল কাঁঠালের ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষক। সেই সাথে চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি ন্যায্যমূল্যও পাচ্ছেন তারা। ধানের ক্ষতি কাঁঠালে পুষিয়ে ওঠার প্রত্যাশা তাদের। এ দিকে কাঁঠাল দীর্ঘ দিন সংগ্রহের পাশাপাশি অপচয় রোধে বিজ্ঞানীদের প্রক্রিয়াজাত পণ্য বাজারে বিক্রি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে গ্রীষ্ম মৌসুমের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন রসাল জাতীয় ফল কাঁঠাল। এমন দৃশ্য সবচেয়ে দেখা যায় ময়মনসিংহের ভালুকা, ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা উপজেলায়। এ বছর কৃষক ধানে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কাঁঠালের ফলন ভালো হওয়ায় পুষিয়ে ওঠার আশা করছেন। এছাড়াও পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে কাঁঠাল বিক্রি করে বাড়তি আয়ে খুশি তারা।
ময়মনসিংহের ভালুকার বাঁশিল গ্রামের কৃষক রাকিব হাসান বলেন, আমাদের এ গ্রামটা কাঁঠালের জন্য বিখ্যাত। গত বছর আমাদের বাগান থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছিলাম। এ বছরও ফলন ভালো হয়েছে। কাঁঠাল পাকতে শুরু করছে। দামও বাজারে মোটামুটি ভালো। বিনা পরিশ্রমেই কাঁঠাল থেকে আমরা লাভবান হচ্ছি।
ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের কৃষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমাদের এলাকাটা পাহাড়ি অঞ্চলের মতো হওয়ায় তেমন একটা ফসল হয় না। এসব অনাবাদি জমিতে এ বছর কাঁঠাল ভালো হয়েছে। প্রতিটি গাছের নিচ থেকে উপর পর্যন্ত কাঁঠাল হয়েছে। বেপারিরা আগে থেকেই যোগাযোগ রাখছেন তাদেরকে কাঁঠাল দেওয়ার জন্য। মনে হচ্ছে, এ বছর কাঁঠালের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাবে।
কাঁঠালের স্থানীয় বেপারি রাসেল শেখ বলেন, গত বছর কাঁঠাল কেনাবেচা করে ৩ লাখ টাকা আয় হয়েছে। সেই আশায় এ বছর ১৭টি কাঁঠাল বাগানের ইজারা নিয়েছি। দূর-দূরান্তের বেপারিদের বেশ সাড়া রয়েছে। আশা করছি, এবারো কাঁঠালে সুবিধা করা যাবে।
ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতিউজ্জামান বলেন, জেলায় এ বছর দুই হাজার তিনশ নব্বই হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি কাঁঠাল হয়েছে ভালুকা, ফুলবাড়িয়া ও ত্রিশাল উপজেলায়। কৃষি বিভাগ শুরু থেকেই পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে কাঁঠালকে রক্ষা করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। অনাবাদি জমিতে খরচ ছাড়াই উৎপাদিত কাঁঠালে কৃষক যাতে করে বেশি লাভবান হতে পারে, সেই লক্ষ্যে প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, আগামী বছর তা সম্পন্ন হবে। সেটি হলে কৃষকের কাঁঠাল পচে আর নষ্ট হবে না।