পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২২, ০২:১২ পিএম
ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত শামীম হোসেন মৃধা। ছবি: পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় স্কুলছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের ঘটনায় ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ শামীম হোসেন মৃধাকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
আজ শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১১ জুন ভান্ডারিয়ার এক স্কুলছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ভান্ডারিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ধর্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে ভুক্তভোগীর স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব ওই ধর্ষককে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শামীম জানায়, ওই ছাত্রী পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ধারালো অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই ওই ধর্ষক ঢাকায় এসে আত্মগোপন করে।
র্যাবের এই মুখপাত্র জানান, শামীম একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি গভীর রাতে ভান্ডারিয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ২০১৭ সালে ১ নভেম্বর একই উপজেলার এক মাদ্রাসাছাত্রীকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রামদা দিয়ে হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে।
একইভাবে গত বছরের ১০ অক্টোবর আরেক মাদ্রাসাছাত্রীকে যৌননিপীড়ন করে। এসব ঘটনায় ভান্ডারিয়া থানায় বিভিন্ন সময়ে মামলা হয়। এ ছাড়াও সে ধর্ষণের মতো আরও কয়েকটি অপরাধ করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। তবে ভুক্তভোগীরা লোকলজ্জা ও সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে মামলা করা থেকে বিরত থাকে।
র্যাব জানায়, শামীম ঢাকার বাবুবাজার ও গাবতলী এলাকায় সিএনজি এবং প্রাইভেটকার চালক হিসেবে কাজ করে। ১৬ বছর বয়সে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক সেবন ও মাদক কেনাবেচার মাধ্যমে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে শামীম। বিভিন্ন এলাকায় সে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল ও খুলনা এলাকায় আত্মগোপনে চলে যেত। এমনকি আত্মগোপনে থাকাকালেও সে একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। গ্রেপ্তার এড়াতে একই স্থানে বেশিদিন অবস্থান করত না শামীম।
তার নামে বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা ও মাদকসহ অন্যান্য অপরাধে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে। সে ইতোপূর্বে ধর্ষণ ও অন্যান্য মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে ৪-৫ বার কারাভোগ করেছে। এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত শামীমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৬টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব।