নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২২, ০৭:১৪ পিএম
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, দেশের ১০ জেলার ৬৪টি উপজেলা
বন্যাকবলিত। তিনি বলেন, বন্যাকবলিত এলাকার মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ
করছে। বলা হচ্ছে, ১২২ বছরের ইতিহাসে সিলেট ও সুনামগঞ্জে এমন বন্যা হয়নি।
আজ শনিবার
(১৮ জুন) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে
তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী
বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশের সব সংস্থা একসাথে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী
না ঘুমিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম তদারকি করছেন। যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম
চলমান।
সেনাবাহিনী,
নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। উদ্ধার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত
সেনাবাহিনী কার্যক্রম চালাবে বলেও জানান তিনি।
গত ১৫ মে এবর্ষায়
প্রথম দফায় বন্যা হয় সিলেটে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে, মে মাসের বন্যায় গত ১৮ বছরের
মধ্যে সবচেয়ে বেশি পানি হয় সিলেটে। তবে চলমান বন্যা গত মাসের রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।
বুধবার (১৫
জুন) থেকে সিলেটের নিচু এলাকায় পানি জমে যায়। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে তা ভয়াবহ
রূপ নেয়। দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার দিনগত রাতের মধ্যেই সিলেট নগরের বেশির ভাগ এলাকা
তলিয়ে যায় বন্যার পানিতে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই
সিলেটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বাসা-বাড়ি ভাসিয়ে নিয়েছে। একদিনে বন্যার
এমন ভয়াবহ রূপ আগে দেখেনি সিলেটের মানুষজন। বন্যার পানির এমন আকস্মিক বৃদ্ধিতে হতভম্ব
ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষ। অবাক হয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।
ভয়াবহ বন্যার
শিকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও জায়গা পাচ্ছেন না। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে
রয়েছেন সিলেটের বানভাসি মানুষ। এছাড়া জেলার কৃষকরা তাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছেন
বিপাকে। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকরা মানবিক সংকট মোকাবিলায় সবাইকে
সাধ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে উজান
থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জেও গত দুই দিন ধরে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি
হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলাই। ফলে পানিবন্দি হয়ে
পড়েছেন ৪ লাখেরও বেশি মানুষ।
এরই মধ্যে পুরো
সুনামগঞ্জ শহর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার মতো সুযোগও নেই শহরবাসীর।
ফলে পানিবন্দি অবস্থায় না খেয়েই দিন পার করছেন লাখো মানুষ। অনেকে ছোট নৌকায় জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন।