নোয়াখালীতে তরুণী হত্যা, নেপথ্যে পরকীয়া

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২২, ০২:১৬ পিএম

হত্যাকাণ্ডের শিকার ফেরদাউস পাখি। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি

হত্যাকাণ্ডের শিকার ফেরদাউস পাখি। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে তালাকপ্রাপ্ত তরুণীকে গলা কেটে হত্যার চারদিন পর অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত শাহাদাত হোসেন জীবন (২৪) উপজেলার পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক শামছুল আলম দিলসাদের ছেলে।  

আজ রবিবার (১৯ জুন) সকালে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামের একটি সবজি ক্ষেত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, মোবাইল ও ওড়না উদ্ধার করে। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ি থেকে পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক। 

রবিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।  


এসপি আরো বলেন, ভিকটিম ফেরদাউস পাখির গত ২০০৮ সালে প্রথম বিয়ে হয়। সেখানে ৩ বৎসর সংসার করার পর স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়। প্রথম স্বামীর সংসারে তার একটি ৬ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ভিকটিমের পুনরায় অন্য ব্যক্তির সাথে দ্বিতীয় বিয়ে হয়। ৬ মাস পর দ্বিতীয় স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর চলতি বছরের ২৯ মে জীবনের সাথে ভিকটিমের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পরিচয় হয়। তারপর থেকে দুইজনের কথা হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামি জীবন বিবাহিত ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে ভিকটিম কিছুই জানতেন না। পরবর্তীতে আসামি বিবাহিত জেনে ভিকটিম আসামিকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে এড়িয়ে যান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। গত মঙ্গলবার ১৫ জুন পরস্পর যোগাযোগ করে সোনাইমুড়ীর পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজী বাড়ির সংলগ্ন সবজি ক্ষেতে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি এ চাঞ্চল্যকর হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।  

জানা যায়, এ হত্যাকাণ্ডের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম দেওটি ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর নবী, স্বপন ও সেনবাগ উপজেলার মনির ও আবু সুফিয়ানকে আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতম্বপুর গ্রামের দিলসাদের ছেলে ও নিহত নারীর পরকীয়া প্রেমিক জীবনকে মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে আটক করা হয়। পরে তার জবানবন্দির ভিত্তিতে আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জান্নাতুল তার বড় বোনের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ৮টার পর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে তার কোনো খোঁজ পায়নি। পরে বুধবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি উঁচু সবজি ক্ষেত থেকে পাখির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাখির ভাই বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh