ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ঘোষণা

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২২, ০৯:০২ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

করোনা মহামারির পাশাপাশি বন্যা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঋণ পরিশোধে ফের বিশেষ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

গতকাল বুধবার (২২ জুন) রাতে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ। 

এর ফলে আপাতত ঋণের কিস্তির একটি অংশ জমা দিয়েই নিয়মিত গ্রাহক থাকা যাবে। কেউ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন না। তবে এবার আর আগের মতো ঢালাও এ সুবিধা দেওয়া হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ১ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত থাকা ঋণে এই বিশেষ সুবিধা মিলবে। এক্ষেত্রে জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর প্রান্তিকে বড় ঋণের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ পরিশোধ করার কথা যথাক্রমে তার ৫০, ৬০ ও ৭৫ শতাংশ পরিশোধ করলে আর খেলাপি হবে না। কৃষি ও সিএমএসএমই ঋণে যে পরিমাণ পরিশোধ করার কথা তার ২৫, ৩০ ও ৪০ শতাংশ পরিশোধ করে খেলাপিমুক্ত থাকা যাবে। আর বন্যাকবলিত জেলায় কৃষি ঋণ পরিশোধে এর চেয়েও বেশি ছাড় দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, করোনা মহামারির দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ও সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় সংক্রমণ বৃদ্ধি, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে ।

এর আগে ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধে বেশ কয়েক দফা ‘বিশেষ ছাড়’ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশের সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ও সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় সংক্রমণ বৃদ্ধি, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং বহির্বিশ্বে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ঋণগ্রহীতারা তাদের ঋণের বিপরীতে প্রদেয় কিস্তির সম্পূর্ণ অংশ পরিশোধে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, গত ১ এপ্রিলে বিদ্যমান অশ্রেণীকৃত তলবি প্রকৃতির ঋণগুলো জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তিনটি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধিত হলে ৩১ ডিসেম্বর  পর্যন্ত সেগুলো বিরূপমানে শ্রেণীকরণ করা যাবে না।

বন্যাকবলিত জেলাগুলোর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যাকবলিত জেলাসমূহের (সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক চিহ্নিত বন্যাকবলিত জেলা) ক্ষেত্রে কৃষি খাতে বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে প্রদেয় কিস্তিসমূহ পরিশোধিত না হলেও উক্ত ঋণসমূহ বিরূপমানে শ্রেণীকরণ করা যাবে না।

সিএমএসএমই খাতে বিতরণ করা মেয়াদি ঋণ, যা ১ এপ্রিল অশ্রেণীকৃত অবস্থায় রয়েছে, এর বিপরীতে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে প্রদেয় কিস্তিসমূহের ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ডিসেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে উক্ত ঋণ বিরূপমানে শ্রেণীকরণ করা যাবে না।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh