পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২২, ০৫:৪৫ পিএম | আপডেট: ২৪ জুন ২০২২, ০৫:৪৬ পিএম
ছবি : পিরোজপুর প্রতিনিধি
আর্থিকভাবে
অসচ্ছল ও হতদরিদ্র পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে সারাদেশে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছে
সরকার। দরিদ্র হিসেবে গৃহহীনের কোটায় ঘর পাওয়া এক ব্যক্তির সেই ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র,
আকাশ ডিটিএইচ এবং ফ্রিজ লাগানোর পর এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর
মনে প্রশ্ন- যদি উনি দরিদ্রই হন, তাহলে কিভাবে তার ঘরে এসি এবং আকাশ ডিটিএস এবং ফ্রিজ
ব্যবহার হয়? পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া গ্রামে এঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে ঘুরে
জানা গেছে, এই উপজেলায় হাতে গোনা কিছু সরকারি অফিস, মসজিদ এবং বাসাবাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র
ব্যবহার হয়। এছাড়া এলাকার অন্যান্য বাসা-বাড়িতে বা বহুতল ভবনে সচরাচর এসির ব্যবহার
চোখে পড়ে না। অথচ সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণের ঘরে ব্যবহার হচ্ছে এসি! যিনি ওই ঘরের মালিক
তিনি জাতীয় পার্টি (জেপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজ পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী
উপজেলার ৩ নং বালিপাড়া ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক মো. ইকবাল সেপাই। একটি রাজনৈতিক সংগঠনের
নেতা হওয়ার সুবাধে দলীয় সুপারিশে তিনি এঘরটি পেয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি
ড্রেজিং ব্যবসার সাথে জড়িত। মাসে ৫০ থেকে এক লাখ টাকার মতো তার আয়। চলেন প্রায় দুই
লাখ টাকা মূল্যের পালসার মোটরসাইকেলে। চলাফেরা কিংবা বেশভূষা দেখে বোঝার উপায়ই নেই
যে তিনি দরিদ্র মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য এউপজেলায় ৫৪৪টি গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
এর মধ্যে কিছু ঘর নির্মাণাধীন থাকলেও বাকি ঘরগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এগুলো তালিকাভুক্ত
ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর মাঝে ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে
এ উপজেলায় জাতীয় পার্টি (জেপি)র দলীয় সুপারিশে বেশ কিছু ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। যার
অধিকাংশই জেপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া
গেছে।
এবিষয়ে নিজ
নামে আশ্রয়ণের ঘর পাওয়া মো. ইকবাল সেপাই বলেন, এটা খোলামেলা জায়গা, সকাল থেকে এখানে
রোদের তাপমাত্রা বেশি হয়, ফলে আমার বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই আমি কিস্তিতে নিয়ে এসি
লাগিয়েছি।
পিরোজপুরের
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাধবী রায়, ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুৎফুন্নেসা
খানম ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. এম. মতিউর রহমান আজ শুক্রবার (২৪ জুন) দুপুরে
ওই ত্রাণের ঘর পরিদর্শন করেন।
ইন্দুরকানী
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। যদি
কোনো ভুল পাওয়া যায় আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।