অধ্যাপক অজিতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২২, ০৬:৪৯ পিএম

অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদার

অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদার

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষকের বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে শাস্তি দাবি করেছে জাবি সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ।

জাবির পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ আনা হয়েছে। 

গত ২৪ জুন (শুক্রবার) ৩৯তম সিনেট অধিবেশনে আলোচ্যসূচির ৯ নং এজেন্ডাভুক্ত ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সেশন বেনিফিট রহিতকরণ অনুসমর্থন এবং সংশ্লিষ্ট সংবিধি এর ১৪ নং ধারা সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রস্তাবিত সংশোধন চূড়ান্ত অনুমোদনের বিষয় বিবেচনা (পরিশিষ্ট ৬)’ বিষয়ে আলোচনার সময় মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা একবছর বাড়ানোর বিরোধিতা করে মুক্তিযোদ্ধাদের লুটতরাজকারী ও নারী নিপীড়নকারী বলে বক্তব্য দেন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার।

বক্তব্যে অজিত কুমার বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৪ বা ১৫ তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কালও দেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম সেটাও দেখেছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হয়েছি। অনেক কিছুই দেখেছি...আমরা যখন ছাত্রলীগের রাজনীতি করি তখন বড় দুর্দিন ছিলো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আজকে এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে যে ইমোশন তৈরি হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের অবশ্যই আমি সম্মান করি। আবার এই মুক্তিযোদ্ধারাই কিভাবে নিপীড়ন করেছে নারীদের, আমি দুয়েকটা নামও বলতে পারি। আমার মামাও মুক্তিযোদ্ধা ছিল, এই নির্যাতনে তাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা লুট করা শুরু করেছে। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বললে অনেক কথা আসে।’

এদিকে এ ঘটনায় অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারের শাস্তি দাবি করেছে জাবি সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ। সংগঠনটির আহবায়ক ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদারের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সিনেট সভায় মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা একবছর বাড়ানোর বিরোধিতা করে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার মুক্তিযোদ্ধাদের লুটতরাজকারী ও নারী নিপীড়নকারী বলে মন্তব্য করেছেন। অধিবেশনে বেশিরভাগ সিনেট সদস্যরা চাকরির সুবিধা বহাল রাখার ব্যাপারে মত দিলেও এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অধ্যাপক অজিত এমন অশালীন মন্তব্য করে মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমির হোসেনসহ দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করেছেন।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘এই ধৃষ্টতামূলক মন্তব্যের মাধ্যমে অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো একাডেমিক এবং প্রশাসনিক পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এ ঘটনার সঠিক বিচার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এটি দেশবাসীর পবিত্র চেতনায় চরম আঘাত বলে প্রতীয়মান হবে।’ বিবৃতিতে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেও এ ঘটনাটি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

এবিষয়ে অধ্যাপক অজিত কুমারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত এবং আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতির। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেও তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh