ঈদকে কেন্দ্র করে রমরমা মৌসুমি ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২২, ০৭:১৪ পিএম

কোরবানির পশুর জন্য গো-খাদ্য বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ী। ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির পশুর জন্য গো-খাদ্য বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ী। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আযহার আর মাত্র একদিন বাকি। ইতোমধ্যে হাটগুলোতে কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু হয়ে গেছে। অন্যদিকে পশুর খাবার ও জবাই করার পর মাংস প্রস্তুতের সরঞ্জাম নিয়ে নগরজুড়ে বসেছে মৌসুমি ব্যবসা।

বিশেষ করে গো-খাদ্য, কাঠের গুঁড়ি ও চাটাইয়ের রমরমা ব্যবসা চলছে। কোরবানিকে কেন্দ্র করে কিছুটা অর্থ উপার্জন করাই তাদের মূল লক্ষ্য। প্রতি বছর এই সময় কোটি কোটি টাকার বিক্রি হয় বলেও জানান তারা। তবে গো-খাদ্যের দাম আগের তুলনায় অনেক বাড়তি বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট, পাড়া-মহল্লার অলিগলি ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য। কাওরান বাজারে চৌকি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আমার মূল ব্যবসা চৌকি তৈরি করে বিক্রি করা। কিন্তু কোরবানির ঈদ এলেই মাংস কাটার খাট্টা আর পাটি নিয়ে বসি। এবার দুই লাখ টাকার মাল নিয়ে বসেছি।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, তেঁতুল কাঠে তৈরি খাট্টা সাইজ অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর তালের পাটি ১০০ থেকে ২০০ টাকায়।

কোরবানির ঈদ এলেই মাংস কাটার খাট্টা আর পাটি নিয়ে বসেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

মোহাম্মদপুর টাউন হলের পাশে কাঁচা ঘাস নিয়ে বসে আছেন কয়েকজন মৌসুমি বিক্রেতা। ঘাসগুলো গাজীপুর ও সাভার থেকে আনা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে এক মুঠো ২০ টাকায় বিক্রি হয়। অনেকটা বিনা পুঁজিতেই লাভ করছেন এসব কাঁচা ঘাস ব্যবসায়ীরা। শুধু ঘাসগুলো সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

তবে এখন আর খোলা মাঠ নেই। তাই ঘাসও কম বলে আক্ষেপ করেন ব্যবসায়ী হাসান। বছরের অন্যান্য সময় ছুটা কাজ করলেও ঈদে তিনি সাভার থেকে ঘাস নিয়ে আসছেন। দিনের ঘাস দিনেই বিক্রি করে চলে যান।

ঘাস-খড় ছাড়াও স্থানীয় এলাকা ও বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশুর অন্যান্য খাবার। ভুসি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। এর মধ্যে রয়েছে গমের ভুসি, ডাবলির খোসার ভুসি, মুগ ডালের ভুসি। ধানের কুঁড়া ৪০ টাকা। আর সব কিছুর মিক্সড ৬০ টাকা কেজি। এছাড়াও খাইট্টা পাওয়া যাচ্ছে ১৫০-৩০০ টাকা কেজিতে।

এদিকে পশুর সৌন্দর্য বাড়াতে বছিলা হাটের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আজগর আলী। তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন হাটে ঘুরে ঘুরে মালা বিক্রি করছি। পশুর সৌন্দর্য বাড়াতে লোকেরা আমার কাছ থেকেই মালা কিনে নিয়ে যায়। প্রতিটি মালা ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছি।

কোরবানির পশুর সৌন্দর্য বাড়াতে কেউ কেউ মালাও কিনে থাকেন 

কোরবানির গরু কেনার পর ঈদের দিন বড় দায়িত্ব থাকে পশুর মাংস কেটে বণ্টন করা। আর তার জন্য প্রয়োজন চাকু-ছুরি। তাই ঈদের আগের রাতেই পুরনো সরঞ্জাম শান দিতে অনেকে ব্যস্ত থাকেন। অনেকে আবার নতুন করে কেনেন। ক্রেতার সেই চাহিদা পূরণে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারের দোকানে। কাওরান বাজারে চাকু-ছুরির ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের দুই দিন আগ থেকে বিক্রি বাড়ে তাদের।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের ছুরি বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলো মূলত কেজি দরে বিক্রি হয়। কোনো কোনো ছুরি পিচ হিসেবেও বিক্রি করা হচ্ছে। দেশি লোহার তৈরি ছুরি-চাপাতির পাশাপাশি চায়না ছুরিও বাজারে দেখা যায়।

দেশি ছুরিগুলো রেলের বা গাড়ির স্প্রিং এই দুই ধরনের লোহা দিয়ে তৈরি। দামে এবং শানেও রয়েছে ভিন্নতা। কেজি হিসেবে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। খুচরা কিনলে ৮০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh