ভুয়া আইপিএলে জুয়া খেলে বোকা হলেন রুশরা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২২, ১২:২৭ এএম | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২২, ১২:৫৫ এএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঙ্কাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট হিসেবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। আইপিএলের প্রতিটি আসরকে ঘিরেই বিশ্বজুড়ে বাজি ধরে থাকেন জুয়াড়িরা। রাশিয়ার জুয়ারিরাও বাজি ধরেছিলেন আইপিএল নিয়ে। কিন্তু পরে জানা গেল, যে আইপিএলে বাজি ধরে তারা টাকা উড়াচ্ছেন, সেটি নিতান্তই ভুয়া।

গত ২৯ মে আইপিএলের সর্বশেষ আসরের পর্দা নামার পর ওই আসরের আদলে ভারতের গুজরাটে আরেকটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হয়। মাত্র ২১ জন খামার শ্রমিককে ক্রিকেটার সাজিয়ে এ টুর্নামেন্ট শুরু করা হয়। মূলত রুশ জুয়ারিদের বোকা বানাতেই এ আসরের আয়োজন করা হয়।

বিবিসি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, দৈনিক ৪০০ রুপি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে পর্যায়ক্রমে চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং গুজরাট টাইটানসের জার্সি পরিহিত খামার শ্রমিকরা এ টুর্নামেন্টে ক্রিকেটারের ভুমিকায় কাজ করে থাকেন। এমনকি খেলা পরিচালনার জন্য ভুয়া আম্পায়ার এবং বিখ্যাত ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের কণ্ঠ হুবহু নকল করতে সক্ষম ব্যক্তিকে ভাড়া করা হয়।

ইউটিউবে স্ট্রিমিং হওয়া খেলাগুলোয় উচ্চমাত্রার ক্যামেরা স্থাপন করে লাইভ স্ট্রিমিং স্ক্রিনে স্কোর প্রদর্শনের জন্য কম্পিউটার জেনারেটেড গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়। মাঠে দর্শকদের উপস্থিতি বুঝানোর জন্য ইন্টারনেট থেকে ক্রাউড নয়েজ সাউন্ড ইফেক্ট ডাউনলোড করে ব্যবহার করা হয়। তবে হ্যালোজেন বাতি দিয়ে আয়োজিত হওয়ায় ক্যামেরাম্যানরা পুরো মাঠের চিত্র না দেখিয়ে শুধুমাত্র খেলোয়াড় ও ২২ গজের পিচের দৃশ্যই ক্যামেরার সামনে আনতেন।

এ নকল আইপিএল আয়োজনের মূল হোতা ছিলেন শোয়েব দাবদা। ইউটিউবে স্ট্রিমিংয়ের সময়ে রুশ জুয়ারিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাজি ধরতেন। তবে মজার বিষয়, তারা আইপিএলের সময়সূচি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। রুশ জুয়াড়িদের বাজি ধরার পর শোয়েব দাবদা এবং তার প্রতিনিধি দল মাঠে থাকা আম্পায়ার এবং খেলোয়াড়দের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতেন। আম্পায়ার এবং খেলোয়াড়রাও সে অনুযায়ী কাজ করতেন।

ভারতীয় পুলিশের দুই কর্মকর্তা আচাল ত্যাগী এবং ভাবেশ রাঠোড় জানান, খামারটি ভাড়া করে সেখানে হ্যালোজেন বাতি লাগানো হয়। ২১ জন খামার শ্রমিককে ম্যাচপ্রতি ৪০০ রুপির বিনিময়ে ভাড়া করা হয়। টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাজি ধরে আম্পায়ারকে ওয়াকিটকির মাধ্যমে চার-ছয়ের সংকেত দেওয়া হতো। নির্দেশনা অনুযায়ী এরপর বোলার ধীরগতিতে বল করতেন, যাতে চার বা ছয় মারতেন ব্যাটসম্যানরা।

টুর্নামেন্ট শুরুর তিন সপ্তাহ চলার পর কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব শুরু হওয়ার সময়ে বিষয়টি স্থানীয় পুলিশের চোখে পড়ে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার জন্য এখন পর্যন্ত পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া, রাশিয়ান জুয়াড়িদের কাছ থেকে ৩ লাখ রুপি উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh