১৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের একমাস পর গ্রেপ্তার ৪

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২২, ০১:৩১ পিএম | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২২, ০১:৩২ পিএম

গ্রেপ্তারকৃত চার ছিনতাইকারী। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি

গ্রেপ্তারকৃত চার ছিনতাইকারী। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কর্মীর কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের দীর্ঘ একমাস পর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে চার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এসপি মো.শহীদুল ইসলাম। এ সময় ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে নগদ ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫শ টাকা উদ্ধার ও ৩টি মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর করিমপুর এলাকার ইছহাক মিয়ার বাড়ির মো.আবুল কাশেসের ছেলে যুবায়েদ হোসেন বিপ্লব (২৮), ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজিপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে পারভেজ (৩০), ১১নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত অজি উল্যার ছেলে আমিরুল ইসলাম সুজন (২৯), গনিপুর এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো.সাহাব উদ্দিন (৩৭)।

এর আগে, গতকাল বুধবার (১৩ জুলাই) চার ছিনতাইকারীকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় একাধিকস্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী দুই ভাই ইয়াছিন আরাফাত রহিম (৩২) ও মহিউদ্দিন সোহাগ (৩৮)। তারা উপজেলার গনিপুর এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

এসময় তাদের বসত ঘর থেকে ৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকী আসামিদের কাছ থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।

আটককৃতরা জানায়, সুজন ২ লাখ টাকা, বিপ্লব ১ লাখ টাকা, পারভেজ ১ লাখ টাকা ভাগ হিসেবে পায়। বাকি টাকা সোহাগ নিজের কাছে রেখে দেয়। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের আশেপাশে থেকে সোহাগ টাকা বহনকারীর গতিবিধি সুজনকে জানায় এবং রহিম রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পালাতে সহায়তা করে। ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হয় রহিমের মোটরসাইকেল। পরে তা সুজনের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।

এদিকে সুজন নিজেকে দুর্গাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় প্রদান করে। রমিহ পৌর ছাত্রলীগের কথিত নেতা হিসেবে সর্বত্র নিজেকে পরিচয় দেয়। অপর পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

এর আগে, গত মাসের ২০ জুন দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আটিয়াবাড়ির পোল সংলগ্ন এলাকায় ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এক কর্মীর কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মাস্টার এজেন্ট পয়েন্ট থাকে। এ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে অন্যান্য সাধারণ এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে টাকা সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিনের মতো গত ২০ জুন সকালের দিকে চৌমুহনী ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাস্টার পয়েন্ট থেকে তাদের কর্মী মোজাম্মেল হক ওরফে জামসেদ ১৯ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।

ওই টাকা তিনি বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা এজেন্টদের কাছে বিতরণের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে করে আটিয়াবাড়ি পোল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা তিন যুবক আরেকটি মোটরসাইকেল নিয়ে তার গতিরোধ করে। এ সময় তারা মোজাম্মেলের কাছ থেকে জোরপূর্বক ১৯ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে এ ঘটনায় গত ২১ জুন চৌমুহনী ডাচ্ বাংলা ব্যাংকিংয়ের মাস্টার এজেন্ট মোহাম্মদ সাইফুল বাশার (৪৩) বাদীয় হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনের নামে ১৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।  
 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh