বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২২, ০৬:৪৩ পিএম | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২, ১১:৫১ এএম
পরীমনি। ছবি: সংগৃহীত
মা হতে চলেছেন আলোচিত-সমালোচিত
চিত্রনায়িকা পরীমনি। আর মাত্র মাস দুয়েকের অপেক্ষা। এর পরই অভিনেত্রীর কোলজুড়ে আসবে
তার প্রথম সন্তান। এই অবস্থায় আরো এক মামলার জালে পরীমনি। মারধর, হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর
ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন
মাহমুদ।
শুধু তাই নয়, সোমবার সেই মামলা
গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
আগামী ৬ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এ সম্পর্কে পরীমনির মন্তব্য
জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল নায়িকার সাথে। কিন্তু একাধিক বার তার ব্যক্তিগত সেলফোনে কল
করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে নক করেও অভিনেত্রীর কোনো সাড়া মেলেনি।
কিন্তু কেন ফোন বন্ধ রেখেছেন
পরীমনি? কী হলো নায়িকার? পরীমনিকে না পেয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল তার স্বামী অভিনেতা শরিফুল
রাজের সাথে। পাওয়া যায়নি তাকেও। জানা গেছে, ঈদের দিন থেকেই নতুন সিনেমা ‘পরাণ’ নিয়ে ভিষণ ব্যস্ত তিনি। প্রতিদিনই সারাদেশের হলে হলে তাকে
দৌঁড়াতে হচ্ছে। দর্শকদের সাথে সিনেমা দেখা ও কুশল বিনিময় করতে হচ্ছে।
এই যখন অবস্থা, তখন দুটি মামলা
ঝুলছে পরীমনির মাথার ওপর। একটি মামলা হয় গত বছরের ৫ আগস্ট। মাদকের ওই মামলাটির বাদী
র্যাব। এ মামলায় প্রায় এক মাস জেলও খেটেছেন অভিনেত্রী। যদিও মা হতে যাওয়ার কারণে মামলাটির
ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন নায়িকা। তারই মাঝে গত ৬ জুলাই পরীমনির বিরুদ্ধে
মামলা করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
মামলায় বাদী নাসির উল্লেখ করেন- পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করে না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান।
২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার
পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে এবং দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা
ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত ১টা ১৫
মিনিটে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসিরকে ডাক দেন। তাদের
সাথে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন।
একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির
মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে
পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন। নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে গালমন্দ
করেন। নাসির এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং
গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির মাথায় এবং বুকে
আঘাতপ্রাপ্ত হন।
বাদী মামলায় আরো উল্লেখ করেন,
‘পরীমনি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন এবং বোট
ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির
উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।’
এর আগে গত বছরের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা
ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং আরও
চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। পরে ৬ সেপ্টেম্বর মামলার
তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের
বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
চলতি বছরের ১৮ মে ঢাকার নারী
ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
গঠন করেন। একই সাথে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। অভিযোগ গঠনের
সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি। একটু দেরিতে হলেও পাল্টা মামলায়
পড়লেন পরীমনি।