১১ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে অধ্যাপক মাত্র একজন

আব্দুস সালাম, বশেমুরবিপ্রবি

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২২, ০১:৩৮ পিএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান, গবেষণার সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি এবং উচ্চশিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০১১ সাল থেকে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

তবে দীর্ঘদিনেও একাডেমিক ও প্রশাসনিক খাতে সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে অধ্যাপক সংকটে শীর্ষে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি বশেমুরবিপ্রবি।

ইউজিসির প্রতিবেদনে অনুযায়ী এক হাজার বা তার বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী অধ্যায়রত রয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন অধ্যাপক সংখ্যা বশেমুরবিপ্রবিতে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৮ টি অনুষদের অধীনে ৩৩ টি বিভাগে  ১১,১৯৮ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত থাকলেও অধ্যাপক রয়েছেন মাত্র ১ জন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির সমসাময়িক সময়ে প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সংখ্যা যথাক্রমে ১২ জন এবং ০৯ জন,  ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে অধ্যাপক সংখ্যা যথাক্রমে ১২ জন এবং ৮২ জন, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সংখ্যা ১০ জন এবং ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সংখ্যা ০২ জন।

অধ্যাপক সংকট প্রসঙ্গে ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, অধ্যাপকের স্বল্পতা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি প্রধান অন্তরায়। যেমন- আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ছাত্র আমি। কৃষি অনুষদের বিভাগগুলোর পড়ালেখা মূলত গবেষণাভিত্তিক। আর গবেষণার জন্যে অভিজ্ঞ অধ্যাপকের বিকল্প নেই। অধ্যাপকের সংকট থাকায় বর্তমানে শিক্ষার্থীরা চাইলেও খুব একটা গবেষণা করতে পারছে না।

এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, বলা হয়ে থাকে একজন অধ্যাপক একটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে যে পরিমাণে জ্ঞান বিতরণ করতে পারেন অভিজ্ঞতা স্বল্পতার কারণে ৫ জন প্রভাষকও সেই পরিমাণ জ্ঞান বিতরণ করতে পারেন না। তাছাড়া, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার মানও মূলত গবেষণার ওপর  নির্ভর করে। তাই শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবিত্তিক উন্নতি এবং গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা নিশ্চিতের জন্য প্রতিটি বিভাগে অন্তত একজন অধ্যাপক থাকা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, আমাদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অধ্যাপক পাওয়া কঠিন। কারণ অধিকাংশ শিক্ষকই বড় শহর ছেড়ে এখানে আসতে চান না।

তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক সংকট নিরসনে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খণ্ডকালীনভিত্তিতে অধ্যাপকদের নেয়ার বিষয়ে একটি বিকল্প প্রস্তাব আমি ইউজিসিকে দিয়েছি। তারা প্রস্তাবটি পজেটিভলি নিয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করলে অধ্যাপক সংকট নিরসন। ইতোমধ্যে আমাদের কয়েকটি বিভাগও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মাধ্যমে ক্লাস নেয়া শুরু করেছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh