সেদিন যা ঘটেছিল মহিউদ্দিন রনির সাথে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২২, ০৩:৩৫ পিএম | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২, ০৩:৩৬ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

রেলওয়ের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ঢাবি ছাত্র মহিউদ্দিন রনি লং মার্চ শুরু করেছেন। টানা ১৩ দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা রনি মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুর ১২টায় লং মার্চ শুরু করেন। গন্তব্য কমলাপুর থেকে টিএসসি হয়ে রেলভবন।

সেদিন মহিউদ্দিন রনির সাথে রেল টিকিট নিয়ে কী হয়েছিল তার বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। মহিউদ্দিন রনি সাংবাদিকদের কাছে সেদিনের ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন।

রনি বলেন, ‘১৩ জুন আমার পরিবারকে রাজশাহী পাঠানোর উদ্দেশে অনলাইন থেকে ৪টা ট্রেনের সিট বুক করি। এরপরে আমি বিকাশে পেমেন্ট অপশনে যাই। সেখানে আমার নম্বর দিই। তারপর একটা ভেরিফিকেশন কোড আসে। কোড আসার পর আমার টাকাটা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু আমি অবাক হলাম, ভেরিফিকেশন কোড আর পিন কোড ছাড়াই টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।

এরপর আমি বিকাশের কল সেন্টারে কল দিয়ে তাদের জানাই, ট্রেনের সিট বুকড হয়নি অথচ আমার টাকাটা আপনারা কেটে নিলেন। আমার কাছে কোনো স্ট্যাটমেন্টও নাই। এটা কি কিরবেন?’

রনি বলেন, ‘বিকাশ থেকে তারা জানালেন, টাকাটা তাদের সার্ভার থেকে কাটা হয়নি, কাটা হয়েছে সহজ ডট কমের সার্ভার থেকে। তিন কর্ম দিবসের মধ্যে যদি টাকা ফেরত না পেলে সহজ ডট কমের সার্ভারে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

রনি জানালেন, তিন কর্মদিবস পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তিনি ওইদিনই সহজ ডট কমের সার্ভার রুমে আসেন। সেখানে নিউটন বিস্বাস নামে একজন কম্পিউটার অপারেটর তার সমস্যার কথা শোনেন।

রনি বলেন, ‘নিউটন বিশ্বাস আমাকে জানান, টাকাটা কেটে নেওয়া হয়েছে আর সেটি তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার টিকিটও দেওয়া যাচ্ছে না কারণ সিটগুলোও ব্লকড হয়ে গেছে।

আমি সেখানে দেখলাম সহজ ডট কমের অন্য একজন কম্পিউটার অপারেটরের সাথে বসে অন্য এক ব্যক্তি সিটের বিষয়ে কথোপকথোন করছেন। তারপর আমি তার কাছে জিজ্ঞেস করলাম। বললাম, ভাই আমাকে একটু সাহায্য করেন। উনিও বললেন, ভাই আপনার সিটগুলোতো ব্লক হয়ে গেছে। তারপর আরো কিছু পোগ্রামিংয়ের ভাষা বললেন যার আমি কিছুই বুঝতে পারিনি।

রনি জানান, এরপর তিনি সেখানে দেখলেন ওই কম্পিউটার অপারেটর তার সিট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বললেও তিনিই আবার রনির সেই ৬৮০ টাকার সিট ১২০০ টাকায় পাশে বসে থাকা ব্যক্তির কাছে বিক্রি করলেন।

এরপর কি করলেন জানতে চাইলে রনি বলেন, ‘আমি এর প্রতিবাদ করে কারণ জানতে চাইতেই একজন পুলিশ সদস্য আমাকে ধাক্কা দিতে দিতে সেখান থেকে বের করে দিতে উদ্যত হন। সেসময় আমি ধাক্কা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে পুলিশ সদস্য বলেন, তাকে হায়ার অথরিটি নির্দেশ দিয়েছে তাকে এখান থেকে সরিয়ে দিতে। এরপর উনি আমাকে ধাক্কা দিতে দিতে সেখান থেকে বের করে দিলেন।

মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘রেলওয়ে ই-টিকিটিং সিস্টেম এবং সহজ ডট কমে টিকিট কাটতে গিয়ে দেশের লাখ লাখ মানুষ এই ঈদে ভোগান্তির শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে আমিও একজন।

উল্লেখ্য, রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গত ৭ জুলাই থেকে অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। তার এই প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি মঙ্গলবার ১৩ দিনে গড়িয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh