কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২২, ০৬:১৫ পিএম
কলেজছাত্রীর অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা তিন যুবক। ছবি: কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রেমিকার (১৮) সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা ফেসবুক-ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে।
এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কথিত প্রেমিক সজিব কুমার দাসসহ (১৯) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে, ভিকটিম কলেজছাত্রীর দুলাভাই বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৫ জনকে আসামি করে মুরাদনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা হলেন- কথিত প্রেমিক সজিব কুমার দাস(১৯)। সে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার বানীজুরি গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র দাসের ছেলে, সহযোগী কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রুহুল আমিন(১৭) ও মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ইস্রাফিল হোসেন অয়ন (১৫)।
পুলিশ ও বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নগরপাড় গ্রামে ভিকটিম কলেজছাত্রীর বাসার সাথে সজিব কুমার দাস ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাদের মধ্যে দুই বছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত ২৩ জুন ওই কলেজছাত্রীকে একটি বাড়ির সিঁড়িতে নিয়ে যায় প্রেমিক সজিব। সেখানে তার বন্ধু রুহুল আমিন ও ইস্রাফিল হোসেন অয়নসহ অজ্ঞাতরা অন্তরঙ্গ মূহর্তের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
এসময় ভিকটিম কলেজছাত্রীকে সজিব কুমার দাস জানায়, যদি তার বন্ধুদের টাকা না দেওয়া হয় তাহলে এ অন্তরঙ্গ দৃশ্য ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সে সময় ভিকটিমের কাছে থাকা নগদ ৭হাজার টাকা সজিব কুমার দাসের বন্ধুদের হাতে তুলে দেয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম কলেজছাত্রীকে গত ২৯ জুন সজিব কুমার দাসসহ তার বন্ধুরা রাস্তায় আটকে আবারো টাকা দাবি করে। সে সময় ওই কলেজছাত্রী গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন তাদের হাতে তুলে দেয়।
পরে গত ১৩ জুলাই প্রেমিক সজিব কুমার দাস তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন থেকে ভিকটিমের মায়ের কাছে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করে।
ঘটনাটি ভিকটিম কলেজছাত্রী তার পরিবারকে জানায়। গতকাল সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে পরিবারের লোকজন সজিব কুমার দাসকে দাবিকৃত টাকা নেওয়ার জন্য নগরপাড়ের একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলে। তারা সে রেস্টুরেন্টে আসে। এসময় ভিকটিমের পরিবারের
লোকজন ও স্থানীয়রা তাদের আটক করে। পুলিশকে খবর দিলে মুরাদনগর থানার এসআই হামিদুল ইসলাম তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল বারী ইবেনে জলিল বলেন, আটক করা তিন আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, পর্ণোগ্রাফ্রী আইনে মামলা দায়েরের পর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।