ভরা বর্ষা মৌসুমেও খরা, পুড়ছে কৃষকের স্বপ্ন

গোলাম মোস্তফা মুন্না, যশোর

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২২, ০৩:৩২ পিএম

বিপাকে রয়েছেন জেলার চাষিরা। ছবি: যশোর প্রতিনিধি

বিপাকে রয়েছেন জেলার চাষিরা। ছবি: যশোর প্রতিনিধি

যশোরে ভরা বর্ষায়ও বৃষ্টির দেখা নেই। খরায় আউশের ক্ষেত শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়েছে। আমন চাষ নিয়ে বিপাকে রয়েছেন জেলার চাষিরা। অন্যদিকে পাট জাগ দেওয়া নিয়েও চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।

বাংলা দিনপঞ্জির হিসেবে গত ১৫ জুলাই আষাঢ় চলে গেছে। শুরু হয়েছে শ্রাবণ মাস; কিন্তু এই ভরা বর্ষার মৌসুমে স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা নেই। কখনো কখনো দু-এক পশলা বৃষ্টি হচ্ছে; কিন্তু স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা মিলছে না। এতে জেলার চৌগাছা উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর আউশ ধান চাষি বিপাকে পড়েছেন।  

উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহ থেকে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত। এবার মৌসুমের শুরু থেকেই স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা পাচ্ছেন না কৃষক। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ক্ষেতে সেচ দিতে কৃষকের বাড়তি খরচ হবে। আবার ক্ষেতে আগাছা, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেড়ে যাবে। এতে ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা তো আছেই। 

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চৌগাছা উপজেলার ১১ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আউশ ধানের চাষ হয়েছে। আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আউশের ক্ষেত। অন্যদিকে আমনের জমিতে হাল চাষ করতে পারছেন না কৃষকরা। বিগত বছরে আষাঢ়ের ১৫ তারিখের পর থেকে জমিতে রোপা আমনের চারা রোপণ শুরু করতেন কৃষকরা। খরার কারণে চলতি মৌসুমে বিলম্ব হচ্ছে। উপজেলায় ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে পাট চাষিদের ভোগান্তি পোহাতে হবে। 

চৌগাছাসহ যশোরের বিভিন্ন উপজেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। খাঁ-খাঁ করছে মাঠের পর মাঠ। 

রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আউশ চাষি সামাউল পণ্ডিত বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় তার আউশ ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। 

এ সময় স্থানীয় কৃষক লাভলুর রহমান, আবু সিদ্দিক, ছোট খোকনসহ অনেকের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, খরায় মাঠ পুড়ে চৌচির হয়েছে। জমিতে হাল দেওয়া যায়নি। বৃষ্টি হলে এত দিন জমি তৈরি করা হতো। বৃষ্টি না হওয়াতে সময়মতো চারা রোপণ করা সম্ভব হচ্ছে না। 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার সমরেন বিশ্বাস বলেন, ‘খরার কারণে কৃষকদের মাঠে হাল চাষ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে ফলনে উপজেলায় তেমন একটা প্রভাব পড়বে না। বৃষ্টি হতে দেরি হলে গভীর নলকূপের পানি দিয়ে জমি তৈরি করে রোপা আপন ধান রোপণ করা যেতে পারে।’

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh