পাখি পালন করে সফল নারী উদ্যোক্তা শারমিন

মো. ফজলুল হক

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২২, ০৯:১২ পিএম

উদ্যোক্তা মুশারমিন সুলতানার বার্ড ফ্যাক্টরির পাখি। ছবি: পাবনা প্রতিনিধি

উদ্যোক্তা মুশারমিন সুলতানার বার্ড ফ্যাক্টরির পাখি। ছবি: পাবনা প্রতিনিধি

পাখি পালন করে সফল নারী উদ্যোক্তা মুক্তিযোদ্ধা কন্যা শারমিন সুলতানা। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন নারীরা শুধু ঘরবন্দি পরনির্ভরশীল নয়। তারাও হতে পারেন একজন সফল উদ্যোক্তা। তাই তিনি নিজ উদ্যোগে দেশী বিদেশী পাখি ও গরু পালন করে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। 

শারমিন পাবনার সাঁথিয়া সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়েজ উদ্দিনের মেয়ে ও সাঁথিয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইন্তাজ মল্লিকের ছেলে সোহেলের স্ত্রী। 

জানা গেছে, ২০২০ সালে তার বার্ড ফ্যাক্টরিতে দেশী বিদেশী ২৮ জোড়া পাখি নিয়ে আবাদ শুরু করে। এতে খরচ হয় ৮৫ হাজার ২০০ টাকা। ওই বছরে আয় হয় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ওই বছরের খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০০ টাকা। ২০২২ তা এখন ১১০- জোড়া দেশী বিদেশী পাখি আছে। এতে তার লাভ হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১০০ টাকা। বর্তমানে তার খামারে দেশী, বিদেশী গরু ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে রয়েছে যেমন, ডায়মন্ড ডাব, জাপানিজ বাজিগড়, ফিপ্ত, ককটেল, লাভবার্ড ও দেশী বিদেশী কবুতর। 


মাঝে মধ্যেই পাখি ও গরুর খামার দেখতে আসেন সাঁথিয়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রশিক্ষকরা। কোন সমস্যা দেখা দিলে তাকে পরামর্শ দেন সমাধানের। 

খামার মালিক শারমিন জানান, ২০১২ প্রাণীবিদ্যা বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করে বিয়ে হয় সম্ভ্রান্ত পরিবারে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় চাকরির কোটা থাকা সত্ত্বেও ছোট সন্তানের জন্য সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। সেই থেকে মনে আমার অদম্য ইচ্ছা ছিল স্বনির্ভর হওয়ার। নারী মানেই ঘরবন্দি পরনির্ভর এটা আমি মানতে পারিনি। আমি প্রথমে শুরু করি বাড়ির ছাদে পোল্ট্রি  ফার্ম। সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে প্রতারিত হই। পোল্ট্রি ফার্মে ভাইরাস আক্রান্ত মুরগির বাচ্চা দেওয়ায় ক্ষতি হয়। এতে আমি দমে যাইনি। পরবর্তীতে ওই ঘরে ২০২০ সালে অল্প কিছু পাখি নিয়ে ছোট আকারে পালন শুরু করে এখন সফল হয়েছি। 


তিনি বলেন, এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাহায্য নেই। বিভিন্ন সভা সেমিনারে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। অল্প দিনেই একটা সাফল্য পাওয়ায় বার্ড ফ্যাক্টরির পাশাপাশি গরু মোটা তাজাকরণ প্রশিক্ষণ নিয়ে এসএমএস এগ্রো নামে আরো একটি ফার্ম করে সেখানে গরু, ছাগল পালন করি। আমার বার্ড ফ্যাক্টরি ও এসএমএস এগ্রো ফার্মে গেল ৩ বছরে কয়েক লাখ টাকা আয় করি। বর্তমানে চারজন কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছি। আমি চাই আমার মত শিক্ষিত নারীরা ঘরে বসে না থেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুললে নিজের যেমন অর্থনীতিতে স্বাবলম্বী হবে সেই সাথে দেশেরও উন্নয়ন হবে।

এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মুক্তা ভদ্রা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কন্যা শারমিন একজন সফল উদ্যোক্তা। আমরা তার সফলতা কামনা করি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh