আজিজুর রহমান পায়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২২, ০৩:৩০ পিএম
বন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ছবি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও অতি বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে।
তবে কৃষকরা জানিয়েছেন, গোড়া পচে যাওয়ায় এসব ফসল টিকবে না। দিশেহারা কৃষক পরিবারগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার দাবি জানিয়েছেন। টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ ১২০ কোটি টাকারও বেশি। পানিতে সব হারিয়ে এখন দিশেহারা ৯০ হাজারের বেশি কৃষক।
বন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৯ উপজেলা কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে- জেলা সদর, নাসিরনগর, নবীনগর, সরাইল ও বিজয়নগর উপজেলায়। এসব এলাকার আউশ ও আমন ধান ছাড়াও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় এবার আউশের আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। সবজির আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৪৯৫ হেক্টর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বোনা আমনের আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫৭০ হেক্টর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, পানি নামতে শুরু করলেও ইতোমধ্যে তলিয়ে থাকা জমির ধানের গোড়া পচে গেছে। পানি সরে গেলেও এসব ধান গাছ আর টিকবে না। শুধু তাই নয়, বিস্তীর্ণ এলাকার জমি তলিয়ে যাওয়ায় পশুখাদ্যেরও ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। আবাদ করা ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা কৃষক সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
বাড়ির পাশে ১২০ শতাংশ জমিতে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে মরিচ, শসা ও চিচিঙ্গাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেছিলেন সদর উপজেলার ঘাটিয়ারা গ্রামের চাষি শাহীন মিয়া। আর কিছু দিন পরেই ফলন আসত গাছে; কিন্তু আকস্মিক বন্যার পানিতে সব সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। তার মতো অবস্থা আরও অসংখ্য চাষির।
সাদেকপুর ইউনিয়নের মো. হারিস বলেন, আমার বাবা সাত কানি জমি চাষ করে আমাদের লেখাপড়ার খরচ চালাতেন। বন্যা সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন কীভাবে খাবার খাব, লেখাপড়া করব- এ নিয়ে চিন্তায় আছি।