নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৬:৩১ পিএম
গোপালপুর গ্রামের তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসা। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর সেনবাগের ৯নং নবীপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসার মুতামিম মাওলানা আবদুল ফাত্তাহর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ১০জন আবাসিক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকদের চাপের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষককে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
গত শনিবার (৬ আগস্ট) সকালে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো নিয়ে তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসায় একটি সালিশী বৈঠক বসে। বৈঠকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ওই বৈঠকে ২০-৩০জন অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। ওই বৈঠকের খবর পেয়ে গত দুইদিনে অভিযুক্ত শিক্ষক আর মাদ্রাসায় আসেননি।
ভুক্তভোগী অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানায়, তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসার আবাসিক হলের ৮-১০ জন ছাত্রকে বিভিন্ন সময়ে মাদ্রাসার মুতামিম আবদুল ফাত্তাহ রাতে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যেত। ওই সময় মোবাইল ফোন আনা নেওয়াসহ বিভিন্ন অজুহাতে তার অফিস, শয়ন কক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকারের ঘটনা ঘটায়। এরপর বলাৎকারের শিকার মাদ্রাসার ছাত্ররা বাড়ি গিয়ে আর মাদ্রাসায় আসতে না চাওয়ায় পরিবারের লোকজন তাদেরকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে মাদ্রাসায় পাঠাতে না পেরে মারধর করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
গত শনিবার (৬ আগস্ট) সকালে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো নিয়ে তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসায় একটি সালিশী বৈঠক বসে। ওই বৈঠকের খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আর মাদ্রাসায় আসেননি। অপরদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে মাদ্রাসায় থাকা আবাসিক ছাত্রদের তাদের অভিভাবকরা মাদ্রাসা থেকে অন্য মাদ্রাসা নিয়ে ভর্তি করাচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার সভাপতি ছারওয়ার আলম বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের কারণে ওই অভিযোগটি উত্থাপিত হয়েছে। বিনা দোষে কেন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, মাদ্রাসার আবাসিক বিভাগ অচিরেই বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার চেয়ারম্যান হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব বলেন, অভিভাবকদের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার প্রধানের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার হয়েছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল ফাত্তাহ ফোনে একাধিক বার কল দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, অভিভাবকদের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে ৮-১০টি অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলো মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি তদন্ত করে দেখছে। এ ঘটনা নিয়ে গত শনিবার ২০-৩০জন অভিভাবকের উপস্থিতিতে মাদ্রাসায় একটি সালিশী বৈঠক বসে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারীর বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিভাবক থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।