‘দুর্ঘটনা নয় হত্যাকাণ্ড, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা করবো’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২২, ০১:২১ এএম

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের সামনে স্বজনদের ভিড়

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের সামনে স্বজনদের ভিড়

রাজধানীর উত্তরায় ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। রাতে মর্গের সামনে ভিড় করছেন নিহতদের স্বজনরা। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ।

নিহতদের স্বজনরা বলছেন, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটা স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। তারা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।

আজ সোমবার (১৫ আগস্ট) রাতে মর্গের সামনে কথা হয় নুরুজ্জামান ঢালী নামে এক ব্যক্তির সাথে। তিনি নিহত রুবেল মিয়ার শ্যালক। নুরুজ্জামান বলেন, ‘গাড়ি চলাচল করছে, তার মধ্যেই ক্রেন দিয়ে গার্ডার তোলা হচ্ছিল। ক্রেন উল্টে গেছে, প্রাইভেটকারের ওপর পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ব্যস্ত রাস্তায় ১২০ টন ওজনের গার্ডার তোলা হচ্ছিল। অথচ সেখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। গাড়ি চলাচলও বন্ধ করা হয়নি। নিরাপত্তা থাকলে বা গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখলে আমরা স্বজন হারাতাম না। এটা দুর্ঘটনা হতে পারে না, স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড।’

নুরুজ্জামান ঢালী আরো বলেন, ‘আমাদের সবার একই দাবি, বিচার চাই। সঠিক তদন্ত করে যাতে বিচার নিশ্চিত করা হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই। আমরা এটা নিয়ে মামলা করবো। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা করবো। আইনি প্রক্রিয়া জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

এসময় নিহতদের অন্য স্বজনেরা বিচারের দাবি তোলেন মর্গের সামনে। সবার একই কথা নিরাপত্তা নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতো না।

ঢাকার সাথে গাজীপুরের সড়ক যোগাযোগ আধুনিক করতে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) নির্মাণকাজ চলছে। ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট’ শীর্ষক এ প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচজন নিহত হন।

আজ সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।

রাতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাড়িটিতে মোট সাতজন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- রুবেল (৫০), ঝরণা (২৮), ফাহিমা, জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)।

দুর্ঘটনায় হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১) নামে নবদম্পতিও আহত হয়েছেন। তাদেরকে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন শঙ্কামুক্ত।

স্বজনরা জানান, ফাহিমা হলেন নববধূ রিয়া মনির মা। আর ঝরণা হলেন তার খালা। রুবেল সম্পর্কে ফাহিমা-ঝরণার বেয়াই। জান্নাত ও জাকারিয়া ঝরণার সন্তান। ফাহিমা-ঝরণাদের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুরে। আর রুবেলের বাড়ি মেহেরপুরে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh