কৃষ্ণ ব্যানার্জী, সাতক্ষীরা
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২২, ০৪:২৫ পিএম
সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র
নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। ব্যয় অনুযায়ী আয় বৃদ্ধি না পাওয়ায় মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা। এ অবস্থায় চাষিরা পতিত জমিতে তিল চাষ করে পাচ্ছেন প্রত্যাশার চেয়ে বেশি অর্থ। সঙ্গে নিজেদের ভোজ্যতেলের চাহিদাও মেটাতে পারছেন।
দেশজুড়ে অব্যাহত এই মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সাতক্ষীরায় কৃষকরা পতিত জমিতে ব্যাপকভাবে তিল চাষ শুরু করেছেন। কোনো ধরনের পরিচর্যা ছাড়াই পতিত জমিতে বিঘাপ্রতি ৭ মণ তিল উৎপাদন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বারবার দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এ জেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিতে। সাতক্ষীরায় চলছে অনাবৃষ্টিজনিত খরা। যার ফলে এবার সাতক্ষীরায় তিল চাষে এসেছে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ফলন।
পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিনা তিল-২ চাষাবাদে এই জেলার চাষিরা সফলতা পাচ্ছেন। যা জলবায়ু এবং জেলার আবহাওয়ায় যথাযথ সহনশীল। এই তিল কালো এবং তিন থেকে চারটি প্রধান শাখা হয় এবং অনেকগুলো উপশাখা হয়। ফলে পরের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং ফলন ভালো হয়। জীবনকালও ৯০ দিনের মতো।
খুলনা কৃষি বিদ্যালয়ের প্রফেসর রাকিবুল হাসান বলেন, তিলের তেল পুষ্টিকর এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই তিলের তেল খেলে ত্বক ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে। চাষাবাদের খরচ অনেক কম, আগাছা পরিষ্কার ও পানির তেমন প্রয়োজন হয় না।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল আকতার বলেন, খরিফ-১ মৌসুমে পতিত জমিতে তিল চাষ করে সাতক্ষীরার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। পতিত জমিতে সাতক্ষীরার মতো সর্বত্র চাষাবাদ করতে পারলে প্রতিবছর যে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকার ভোজ্যতেল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় তা থেকে মুক্তি পাবে সরকার।
প্রসঙ্গত, এবার সাতক্ষীরার উপকূলের পতিত জমিতে ৫৫টি প্রদর্শনী খামার করেছে কৃষকরা। চাষিদের দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং ২৫০ কেজি তিল বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। যা থেকে কৃষক ৩০০ বিঘা জমিতে তিলের চাষ করেছে।