ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২২, ০৮:২৭ পিএম | আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২২, ০৯:২৪ পিএম
খামারে তৃতিয় লিঙ্গের সাদিয়া আক্তার রত্না। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
সমাজে তাদেরকে আলাদা চোখেই দেখা হয় এখনো। শুধু নাচ-গান বা অন্যকিছু না তৃতিয় লিঙ্গের সাদিয়া আক্তার রত্না নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একদমই ব্যতিক্রমভাবে। স্বাবলম্বী হতে নিজের বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন ব্যতিক্রমী পাঠার খামার। যা পুরো জেলার মধ্যে তো বটেই আশপাশের জেলার মধ্যেও সবচেয়ে বড় পাঠার খামার হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
জানা যায়, শখের বশে ২০০৮ সালে ১ লাখ টাকায় কেনেন দুটি পাঠার বাচ্চা। এরপরের গল্পটা কালজয়ী। সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গের সাদিয়া আক্তার রত্না ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়ে পেয়েছেন সাফল্য। উদ্যোক্তা হিসাবে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার অজপাড়াগাঁয়ে বলিদাপাড়া গ্রামে গড়ে তুলেছেন পাঠার খামার।
এলাকাবাসী ইসলাম উদ্দীন জানান, এটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ তো বটেই সাথে সাথে তাদের মতো মানুষদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এক নতুন গল্প।
সাদিয়া আক্তার রত্না জানান, নিজের সন্তান না থাকলেও তার নেই কোন কষ্ট। কারণ সন্তানের মতোই তাদেরকে দেকভাল করেন তিনি। ২টি পাঠা থেকে এখন তার খামারে আছে ১১৪টি পাঠা। কাঁঠালের পাতা, ছোলা, ভুসি, খড় খেজুরের গুড় মিশ্রিত পানিসহ সবই খাওয়ানো হয় ওদেরকে। শুধু তাই নয়, খাওয়ানোর সময় পাঠাদের শোনান গান। তারাও রত্নাকে মায়ের মতোই দেখে। পরিপূর্ণতা পাওয়ার পর বিশেষ চাহিদা থাকায় চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন বছরে একবার। দুটি শেডে গড়ে তোলা খামারে এখন ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের পাঠা আছে। সবগুলো পাঠার মূল্য প্রায় কোটি টাকার উপর।
তিনি আরো জানান, তার খামারে বর্তমানে ১০ জন কর্মচারী আছেন। তার মধ্যে আরো দুইজন তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মামুন খান জানান, এই উদ্যোগ একেবারেই আলাদা। সরকারী সবধরনের সুবিধা তাকে দিতে যা যা করা যাই তাই করা হবে। আরো যাতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয় সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেয়া হবে।