সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:৫৫ পিএম
ছবিতে রফিক মিয়া ও শফিক মিয়া। ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুদের টাকা দিতে না পারায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অজপাড়া গায়ের যুবক ফয়সাল আহমেদ সৌরভকে মানুষিক চাপ, ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় অভিযুক্ত প্রধান দুই আসামি সুদ ব্যবসায়ী রফিক মিয়া ও শফিক মিয়া এখনো পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ নিয়ে নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে তাহিরপুরের সর্বস্তরের নাগরিকদের আয়োজন তাহিরপুর বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে শত শত মানুষ।
উল্লেখ্য, গত ১৮ আগস্ট রাতে সৌরভের মৃত্যুর পরদিন দুপুরে তার বাবা শফিক ও রফিককে দায়ী করে অজ্ঞাত আরো তিন থেকে চারজনকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
শফিক উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নে আনোয়ারপুর গ্রামের আবদুল কাহারের ছেলে। আর রফিক একই উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে।
নিহত ফয়সাল সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পাতারী গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে।
মৃত্যুকালে তার চার মাস বয়সী ফাইজা নামে একটি মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। সুদ ব্যবসায়ীদের কারণে অকালে ঝড়ে যাওয়া ওই যুবকের মৃত্যুতে জেলা ও উপজেলা জুড়েই তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই নাজমুল হক বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি, শিগগিরই তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারবো।
উল্লেখ্য, সুদ ব্যবসায়ী রফিক ও শফিক কাছ থেকে তিন থেকে চার বছর পূর্বে এক লাখ টাকা সুদে নিয়েছিল সৌরভ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চহারে সুদ দিলেও তাদের আসল টাকা শোধ হয়নি। উল্টো সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে সুদ ব্যবসায়ী রফিক মিয়া এবং শফিক মিয়া। এজন্য হুমকির মধ্যে ও চাপে ছিলেন ফয়সাল আহমেদ সৌরভ।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ফয়সালের চুনাপাথর ভর্তি নৌকা সুদের টাকার জন্য উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে আটকে দেন রফিক। পরে টাকা দাবি করে অমানুষিক চাপ, ভয়ভীতি ও হুমকি দিলে দিশেহারা হয়ে পড়েন ফয়সাল। এরপরেই রফিক ও শফিককে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।