বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সমাজচ্যুতের প্রতিবাদে আমরণ অনশন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৪০ পিএম

সমাজচ্যুত করে রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন কর্মসূচি। ছবি: টাঙ্গাইল  প্রতিনিধি

সমাজচ্যুত করে রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন কর্মসূচি। ছবি: টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের সখীপুরে মামলার সাক্ষী হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী ও তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন ওই ভুক্তভোগী পরিবার। 

আজ শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের মেয়ের জামাতা, মুজিব কলেজ মোড় মসজিদ কমিটির সভাপতি শেখ ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার বিরুদ্ধে দায়ের করা এক মামলায় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষী দেওয়ার পর থেকে পরিবারটিকে তারা একঘরে করে রাখা হয়েছে।

ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী বলেন, ৯ মাস পূর্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম ভিপি জোয়াহেরের মেয়ের জামাতা, মুজিব কলেজ মোড় মসজিদ কমিটির সভাপতি শেখ ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেলসহ কয়েকজন স্থানীয় বখাটে হাসিনা আক্তার নামে এক নারীর ঘর ভাংচুর ও নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় পুলিশ সরেজমিনে তদন্তকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষী দিলে ফরিদ ও তার বাহিনী মিলে তার ও পরিবারের উপর হামলা চালায়। পরে ৯৯৯ ফোন করলে থানা পুলিশের সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় সখীপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। পরে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় টাঙ্গাইল আদালতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে (সিআর ৪৪২) মামলা করেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। এরপর থেকেই গত নয় মাস ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী ও তার পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে। 

তিনি বলেন, গত কোরবানির ঈদে আমাকে সমাজের মাংসও দেওয়া হয় নাই। এলাকায় কারো সাথে কথা বলতে দেয় না। 

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা না দিতেন তাহলে আমাকে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হতো। এমপি মহোদয়, পৌরমেয়র ও সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বারবার বিচার চেয়েছি কোন প্রতিকার পাইনি। বাধ্য হয়ে আজ আমি পরিবার নিয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছি। 

স্থানীয় সংসদ সদস্যের মেয়ের জামাতা ও মুজিব কলেজ মোড় মসজিদ কমিটির সভাপতি শেখ ফরিদ বলেন, ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার সকল অভিযোগ মিথ্যা। তাকে একঘরে করে রাখা হয়েছে বিষয়টি সত্য নয়। সমাজের একাধিক ব্যক্তির নামে মিথ্যা মামলা করায় সমাজবাসী তাকে সমাজচ্যুত করেছেন।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি পৌর মেয়রকে জানানো হয়েছে। বিকেলে সমাধানের আশ্বাসে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার অনশন প্রত্যাহার করিয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাকে কমান্ডার এম.ও গণিসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা।

এ বিষয়ে সখীপুর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেই বিষয়টি সমাধান করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh