প্রিয় কমিকস, তোমাকে

আহমেদ ইশতিয়াক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৩৩ পিএম

চাচা চৌধুরী ও তাঁর প্রিয় কুকুর রকেট

চাচা চৌধুরী ও তাঁর প্রিয় কুকুর রকেট

ঠিকঠাক মনে নেই, স্মৃতির উপর ভরসা করেই বলতে হচ্ছে, সেই বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহটা ছিল দুর্যোগের। প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি। এক শুক্রবারের বিকেলে বৃষ্টিটা একটু ধরে আসতেই বাবার হাত ধরে গুটিগুটি পায়ে বের হলাম এলাকার লাইব্রেরির উদ্দেশে। ক্লাস থ্রির নতুন বই কিনতে হবে। নতুন ক্লাসের নতুন বই কেনার ব্যাপারটা তখন ছিল একটা উৎসবের মতো। নতুন বই পাওয়ার উত্তেজনায় আমি বিভোর। আকাশে মেঘের গুড়গুড়ানি। আমরা পিতা-পুত্র লাইব্রেরিতে ঢুকতেই ফের শুরু হলো ঝুমঝুম বৃষ্টি। আমরা অনেকটা সময়ের জন্য বই-খাতার রাজ্যে আটকা পড়ে গেলাম। 

বাবা নতুন ক্লাসের বইয়ের সেট উল্টেপাল্টে দেখছেন; কিন্তু ওদিকে আমার খেয়াল নেই। আমার চোখ আটকে আছে একটা হীরকখণ্ডের উপর। এই হীরকখণ্ডের নাম- চাচা চৌধুরী আর আফলাতুন। উপরে ছোট্ট করে লেখা- প্রাণ। কতক্ষণ সেই বইটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম, জানি না। মনে হয় অনন্তকাল। চোখেমুখে হাহাকার। আমার অবস্থা দেখে সম্ভবত বাবার মায়াই হলো, তিনি বললেন, এইটাও কিনে দেব। চাচা চৌধুরী আর আফলাতুনের দাম কত ছিল? পঁচিশ? না-কি ত্রিশ? মনে পড়ছে না। আজ অনেকগুলো বছর পর এসেও চাচা চৌধুরীকে আমি ভুলিনি। এই তো সেদিন, অফিসে এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ। আড্ডার এক পর্যায়ে ভদ্রলোক বললেন, আমার বই পড়ার শুরুটা আসলে মাসুদ রানার হাত ধরে। ক্লাসের বইয়ের ফাঁকে রেখে মাসুদ রানা পড়ে মা-বাপের হাতে কত যে মার খেয়েছি! 

মাসুদ রানা পড়ে মার খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমারও রয়েছে; কিন্তু সেটা ক্লাস নাইন-টেনের সময়কার কথা। তবে বই পড়ার শুরুটা আমার কমিকসের হাত ধরেই। এমনকি ক্লাসের বইয়ের ফাঁকে লুকিয়ে থেকে আমাকে প্রথম মারটাও এই চাচা চৌধুরীই খাইয়েছেন! দিন নেই রাত নেই, আমার হাতে শুধু ‘চাচা চৌধুরী আর আফলাতুন’- একটাই কমিকস আমার, দিনে দশবার করে পড়ি। 

আমার এই করুণ অবস্থা দেখেই হয়তো ঈশ্বরের দয়া হলো; তিনি আমার বাবার মনে কিছুটা মায়া-দয়া দিলেন। এক রাতে বাবা বগলদাবা করে একগাদা পুরনো কমিকস নিয়ে বাসায় ফিরলেন। আনন্দে আমার মরে যাওয়ার দশা— এ-ও কি সম্ভব! এতগুলো চাচা চৌধুরী! 

পুরনো সেই কমিকসের গাদার মধ্যে চাচা চৌধুরীকে ছাড়াও পেলাম নতুন দুজনকে। একজনের নাম- পিঙ্কী, অপরজন- বিল্লু। এই দুই চরিত্রকে তেমন মনে ধরল না, কারণ আমার ধ্যান-জ্ঞানজুড়ে শুধু একজন ব্যক্তি- চাচা চৌধুরী, যার মগজ কম্পিউটারের চেয়েও প্রখর!

মাসুদ রানা পড়ে মার খাওয়া ভদ্রলোকের কথায় স্মৃতিকাতর হয়ে চাচা চৌধুরীকে নিয়ে এলোমেলো কিছু চিন্তাভাবনা করতেই অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, এই চরিত্রটা আসলে কার সৃষ্টি, আমি জানি না! ‘ডায়মন্ড কমিকস’-এর কথা মাথায় এলো; কিন্তু সেটা তো প্রকাশনী। লেখক কে? নিজের অজ্ঞতায় ভয়াবহ লজ্জিত হলাম। যেই কমিকস নিয়ে আস্ত একটা শৈশব পার করে ফেললাম, তার আদ্যোপান্ত আমার অবশ্যই জানা উচিত, এদিকে আবার আমি নিজেও কলম চালিয়ে খাই! কাঁচুমাচু মুখ নিয়ে তাই সাহায্য চাইলাম গুগলের কাছে। গুগল জানালো, ওহে মূর্খ, কমিকসের উপরে ছোট্ট করে যে লেখা ‘প্রাণ’, উনিই এই কমিকসের স্রষ্টা! আমি মনে মনে ভাবলাম, বলে কী! প্রাণ কুমার শর্মা- আমার শৈশবের হিরো চাচা চৌধুরী, জুপিটার গ্রহের বিশালদেহী সাবু আর ছোট্ট কুকুরছানা রকেটের স্রষ্টা তিনি। শুধু তা-ই নয়, বিল্লু-পিঙ্কী-রমন-শ্রীমতিজীর স্রষ্টাও তিনি। ভাবা যায়, এই ভদ্রলোকের নাম আমি এতদিন জানতাম না! প্রিয় প্রাণ কুমার শর্মা, মাফ করবেন! 

সব তথ্যই তো ইন্টারনেটে পাওয়া যায়, তাই প্রাণের জন্ম-মৃত্যুসাল, জীবনী ইত্যাদি উল্লেখ করে নকল বোদ্ধা সাজতে চাই না। শুধু একটা তথ্য উল্লেখ করি- ইংরেজি, হিন্দি, বাংলাসহ ভারতের প্রায় দশটি ভাষায় প্রকাশিত এই চাচা চৌধুরীর কমিকস বিক্রি হয়েছে এক কোটি কপির বেশি! ভাবা যায়! 

এখন কথা হচ্ছে, চাচা চৌধুরী ছাড়া শৈশবে তো আরও বেশ কয়েকটা চরিত্রের সঙ্গে আমার ওঠাবসা ছিল, তাহলে মাথায় শুধু চাচা চৌধুরীর কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে কেন? এর কারণ মনে হয় সহজলভ্যতা। তখন চাচা চৌধুরীর কমিকস মোটামুটি সব লাইব্রেরিতেই পাওয়া যেত। অন্যান্য চরিত্রের কমিকস যে পাওয়া যেত না, তা না; কিন্তু দামটা এক্ষেত্রে বড় একটা ব্যবধান তৈরি করে দিত। গরিব পরিবারের সন্তান আমি। নিত্যনতুন টিনটিন কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমার বাবার ছিল না। টিনটিন কালজয়ী চরিত্র। কমিকসটা তেমন পড়া না হলেও টিনটিনের মুভি দেখেছি। জর্জ রেমির ছদ্মনাম, হার্জ- এই চরিত্রটিকে হয়তো বিশ্বের সর্বকালের সেরা কমিকস-চরিত্রই বলা যায়। ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও কুকুর স্নোয়িকে নিয়ে টিনটিন ঘুরে বেড়ায় দেশ থেকে দেশান্তরে, জড়িয়ে পড়ে একের পর এক রহস্যের বেড়াজালে- সে এক অদ্ভুত অ্যাডভেঞ্চার! শিশুচিত্ত তো বটেই, এমনকি বুড়োদের মনও টিনটিনের সঙ্গে মিশে যায় অনায়াসেই। টিনটিনের বাংলা অনুবাদ করেছেন লেখক নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। বাংলা অনুবাদে তিনি একটা মজার কাণ্ড করেছেন। কুকুর স্নোয়ির নামটা তিনি রেখেছিলেন- কুট্টুস! স্নোয়ির চাইতে কুট্টুসকে অনেক আপন আপন লাগে। অনুবাদের এ-ই হচ্ছে মজা। তর্কসাপেক্ষে বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় এই টিনটিনের কমিকস অনূদিত হয়েছে পঞ্চাশটিরও বেশি ভাষায় এবং বিক্রির সংখ্যা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যে যথেষ্ট- ২০ কোটিরও বেশি! টিনটিনের ব্যাপারে বিস্তারিত যেহেতু পরে জেনেছি, শৈশবে তাই চাচা চৌধুরীই আমার হিরো। তবে সুপারহিরো বলতে ঠিক যা বোঝায়, তার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ফ্যান্টম-এর মাধ্যমে। বাবা যে পুরনো কমিকসের স্তূপ কিনে দিতেন, সেই স্তূপেই আমি পেয়েছিলাম ‘অরণ্যদেব’- ফ্যান্টমের বাংলা অনুবাদ। আরও পেয়েছিলাম সুপারম্যানের কমিকস, বাংলা অনুবাদে। জনপ্রিয় ইংরেজি কমিকসগুলোর বাংলা অনুবাদের খুব কাটতি তখন। পুরনো বইয়ের দোকানে এইসব কমিকসের ছড়াছড়ি। পড়ার কথা বাদ, কমিকসগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতেও অদ্ভুত শান্তি লাগে। যেসব কমিকসের কথা এতক্ষণ বললাম, সেগুলোর সবই অন্য ভাষার। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের বাংলা ভাষায় কি এমন মৌলিক কোনো বিখ্যাত কমিকস নেই? 

এখন নড়েচড়ে বসার পালা। আছে মানে, রীতিমতো বিশ্বরেকর্ড করা কমিকস-চরিত্রটাই আমাদের বাংলা ভাষার! যিনি এই অসাধ্য সাধন করেছেন, তার নাম নারায়ণ দেবনাথ, বাংলা কমিকসের সম্রাট বলা যায় তাকে। 

রেকর্ডের ব্যাপারটা একটু খুলে বলি। ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে জানলাম, একক লেখক-শিল্পী হিসেবে বিশ্বে একটানা বেশি বছর ধরে চলা কমিক-স্ট্রিপ হচ্ছে জনি হার্টের ‘বিসি’ (টানা ৪৯ বছর)। এর পরে আছে হ্যাঙ্ক কেচামের ‘ডেনিস দ্য মেনেস’ (টানা ৪৩ বছর)। 

নারায়ণ দেবনাথ তার ‘হাঁদা ভোঁদা’ কমিক স্ট্রিপটি শুরু করেছিলেন সেই ১৯৬২ সালে শিশুতোষ পত্রিকা ‘শুকতারা’য়। তারপর থেকে ২০১৭ পর্যন্ত তিনি প্রকাশ করে গেছেন হাঁদা ভোঁদার নতুন নতুন পর্ব। যোগ-বিয়োগ করলে দেখা যায় যে, টানা ৫৫ বছর তিনি একটানা চালিয়েছেন এই কমিকস-স্ট্রিপ! অবিশ্বাস্য একটা কাণ্ড!

নারায়ণ দেবনাথের সঙ্গে আমার পরিচয় অবশ্য ‘হাঁদা ভোঁদা’ দিয়ে না, ‘নন্টে ফন্টে’ দিয়ে। চাচা চৌধুরীর পাশাপাশি নন্টে-ফন্টে আমার শিশুচিত্তের অনেকটা জায়গা দখল করে রেখেছিল। 

এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ। কমিকসময় শৈশবের এই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কিছুটা অস্বস্তি উঁকি দিচ্ছে মনের কোণে। বাংলা ভাষার কমিকসের কথা বললাম, কিন্তু বাংলাদেশের কমিকস কই? চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ ভেবে দেখলাম, শৈশবে আমি বাংলাদেশের মৌলিক কোনো কমিকস পড়িনি!

গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বইমেলাতে মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হতে দেখি ‘বেসিক আলী’। হ্যাঁ, এটা বাংলাদেশের, মৌলিক। টিউশনি করতে গিয়ে ক্লাস টেন পড়ুয়া ছাত্রের সংগ্রহে থাকা বেসিক আলীর অনেকগুলো পর্ব আমি পড়েছি। শৈশব-কৈশোর অনেকটা পেছনে ফেলে এলেও বেসিক আলী পড়ে আমি বলতে বাধ্য হয়েছি- চমৎকার! 

কার্টুনিস্ট শাহরিয়ারের এই কার্টুন-স্ট্রিপ বেসিক আলী ২০০৬ সালের নভেম্বর থেকে প্রথম আলোর উপসম্পাদকীয় পাতায় নিয়মিত প্রকাশ হতে থাকে। স্ট্রিপটির জনপ্রিয়তা দেখে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স ২০০৯ সালে পত্রিকায় প্রকাশিত পুরো এক বছরের বেসিক আলীর একটি সংকলন প্রকাশ করে। তারপর থেকেই এখন পর্যন্ত নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে বেসিক আলী।

বাংলাদেশের প্রথম মৌলিক কমিকস তাহলে কোনটি? আমি চেনাজানা অনেককেই জিজ্ঞেস করেছি। কেউ ঠিকঠাক বলতে পারেননি। উড়ো-তথ্যদুনিয়ার সাহায্য নিলাম। জানতে পারলাম ‘ঢাকা কমিকস’-এর কথা, মাত্র চারটা কমিকস নিয়ে নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যেও ২০১৩-তে শুরু হয়ে চলছে এখন অবধি। মৌলিক কমিকসের পাশাপাশি তারা বিখ্যাত লেখকদের উপন্যাস অবলম্বনেও কমিকস প্রকাশ করে। 

ঢাকা কমিকসের একটা কমিকসই আমি পড়েছি, মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস অবলম্বনে সাই-ফাই কমিকস- ‘রুহান রুহান’। 

ইন্টারনেট আমাকে জানালো মাইটি পাঞ্চ স্টুডিয়োর কথা। দেশি সুপারহিরো ‘শাবাশ’ দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু। কিন্তু কমিকসটি বাংলা ভাষায় না, ইংরেজিতে প্রকাশিত। যদিও ইগনাইট প্রকাশনী বাংলায় ‘শাবাশ’-এর ভলিউম ১ ও ২ প্রকাশ করেছে। যারা এই লেখাটা পড়ছেন, তারা হয়তো খেয়াল করবেন যে বাংলাদেশের কমিকস নিয়ে কথা বলতে গিয়েই আমি খেই হারিয়ে ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্যগুলোই শুধু উল্লেখ করছি। এর কারণ কী? পাঠক হিসেবে আমি বাংলাদেশের কমিকসের ধারাটা ঠিক ধরতে পারছি না। ঢাকা কমিকস বা মাইটি পাঞ্চ স্টুডিয়োরা কমিকসের জগতে বিপ্লব আনার চেষ্টা করছে, কিছুক্ষেত্রে তারা হয়তো সফলও; সম্প্রতি বইমেলাতে এই কমিকসগুলোর যথেষ্টই ‘হাইপ’ দেখা যায়। কিন্তু আমার মনে হয়, কোথায় যেন কিছু একটার অভাব আছে। বাংলাদেশের কমিকস নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহী এমন কেউ যদি ইন্টারনেটের কাছে সাহায্য চায়, তাহলে তাকে রীতিমতো হতাশ হতে হবে। বাংলাদেশের কমিকস নিয়ে তথ্যবহুল কোনো আর্টিকেল নেই। অল্পস্বল্প যা আছে, তাতে কৌতূহলের কিয়দংশও মেটে না। পত্র-পত্রিকাতেও এই নিয়ে লেখালেখি হয় খুব কম। ব্যাপারটা দুঃখজনক। 

বইমেলায় কমিকসগুলোর স্টলগুলো দেখলে তা বোঝা যায়- কমিকসের পাঠক এখনো নেহাত কম না। শুধু শিশু-কিশোরই না, প্রায় সব বয়সের মানুষকে আমি আগ্রহ নিয়ে কমিকস কিনতে-পড়তে দেখি। তারপরও, আমার মনে হয়, কোথায় যেন সুতোটা কাটা পড়েছে। এক্সপেরিমেন্ট ভালো, এর প্রয়োজনীয়তাও আছে, কিন্তু এক্সপেরিমেন্টের আগ্রাসনে নির্মলতা হারিয়ে গেলে বিপদ। চাচা চৌধুরী, টিনটিন, নন্টে-ফন্টেরাও অসাধারণ হয়েও ছিল সাধারণ, অদ্ভুত রকমের সরল; ইচ্ছে করলেই যেন হাত বাড়িয়ে তাদের ছোঁয়া যেত। আজকালকার কমিকসে আমি সেটা পাই না। বর্তমানে যারা কার্টুন-কমিকস ইত্যাদি আঁকছেন-লিখছেন, তাদের উচিত এই সরলতার ব্যাপারটাতে সবচাইতে বেশি মনোযোগ দেয়া। কারণ দিনশেষে এই কথাটাই সর্বাংশে সত্যি-সিম্পলিসিটি ইজ দ্য বেস্ট!

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh