মেয়ের লাশ উদ্ধারের ৩৬ ঘণ্টা পর মায়ের লাশ উদ্ধার

জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৩৯ পিএম

জোসনা বেগম ও তার মেয়ে কাজলী আক্তার ময়না। ছবি: জামালপুর প্রতিনিধি

জোসনা বেগম ও তার মেয়ে কাজলী আক্তার ময়না। ছবি: জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে নিখোঁজের পর পৃথক সময়ে মা ও মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জামালপুর সদর উপজেলার বাঁশচড়া ইউনিয়নের বড়ইতাইর খাল থেকে জোসনা বেগমের (৫০) গলাকাটা লাশ  উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তার মেয়ে কাজলী আক্তার ময়নার (৩১) লাশ উদ্ধার করা হয়। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত জোসনা বেগম সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের বানার নয়াপাড়া গ্রামের বাদাম ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের স্ত্রী এবং নিহত কাজলী আক্তার ময়না তার মেয়ে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত শনিবার সকালে জোসনা বেগম ও মেয়ে কাজলী আক্তার ময়না বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের সন্ধান মেলেনি। পরদিন রবিবার সকালে রানাগাছা কুমারিয়া গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে মেয়ে কাজলীর গলায় ওড়না প্যাঁচানো ও রক্তাক্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে মা জোসনা বেগমের সন্ধান মিলছিলো না।

এদিকে কাজলীর লাশ উদ্ধারের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর সোমবার সন্ধ্যায় বড়ইতাইর খালের পানিতে এক নারীর ভাসমান লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করলে পরিবারের লোকজন লাশটি জোসনা বেগমের বলে শনাক্ত করে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে কাজলীকে হত্যা করা হয়। একইসাথে তার মা জোসনা বেগমকেও হত্যার পর লাশ খালের পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

জামালপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী শাহনেওয়াজ জানান, নিহতদের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলো- টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শোলাকুড়ি গ্রামের আব্দুস সোবাহানের ছেলে শামীম হাসান ও জামালপুর সদর উপজেলার বাঁশচড়া জামিরা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মামুন মিয়া।

মা-মেয়ের হত্যার যোগসূত্র অনুসন্ধান ও আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদের আটকে অভিযান চলছে বলেও পুলিশ জানায়।

একটি সূত্র জানায়, নিহত কাজলী আক্তার ময়না মাদ্রাসা থেকে কামিল (এমএ) পাস করে ছিলেন। তাকে বাঁশচড়া ইউনিয়নের জামিরা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায় ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি (ইউপি সদস্য) সাজ মাহমুদ সরকার লালুর ভাতিজা এবং একইগ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে নিপুণ। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে নিপুণ কাজলীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা উৎকোচ চায়। কিছুদিন আগে চার লাখ টাকা দেওয়া হয়। বাকি টাকা চাকরি পাওয়ার পর দেওয়ার কথা ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় কাজলী ও তার মা নিপুণের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পরই নিখোঁজ হন। এদিকে ঘটনার পর থেকে নিপুণও তার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh