জলাবদ্ধতা নিরসনে সাতক্ষীরায় ২টি নদী ও ৭১টি খাল খনন

কৃষ্ণ ব্যানার্জী, সাতক্ষীরা

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:৫৯ পিএম

জলাবদ্ধতামুক্ত করতে নদী ও খান খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। ছবি: সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

জলাবদ্ধতামুক্ত করতে নদী ও খান খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। ছবি: সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরা সদর উপজেলাসহ ৪টি উপজেলাকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে নদী ও খান খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। প্রকল্পগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে ৪টি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, খাল খননের পাশাপাশি বেতনা নদীর পুরোটা খনন করতে পারলেই জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবে জেলার মানুষ। 

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা নিরসনে শালুকা, শালিকাসহ খনন করা হচ্ছে ৭১টি খাল। এছাড়া সমাপ্ত হয়েছে বেতনা ও মরিচ্চাপ নদ খনন। পুরো প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৪৭৫ কোটি টাকা।

সরেজমিনে জানা যায়, বেতনা ও মরিচ্চাপ নদ ভরাট হয়ে গিয়েছিল এক যুগেরও আগে। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় গতিহীন হয়ে পড়ে ৭০টিরও বেশি সংযোগ খাল। ফলে এক যুগেরও বেশি সময় জলাবদ্ধতায় নাকাল সাতক্ষীরার কলারোয়া, সদর, তালা ও আশাশুনি উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষ। এমনকি সাতক্ষীরা পৌরসভার অর্ধেকেরও বেশি অংশ জলমগ্ন থাকে বছরের ছয় মাস। এসব জলাবদ্ধতা থেকে সাতক্ষীরাবাসীকে মুক্তি দিতে একযোগে শুরু হয় বেতনা, মরিচ্চাপ নদ খননসহ ৭০টিরও বেশি সংযোগ খাল। তবে স্থানীয়দের দাবি যথাযথভাবে নদী ও খাল খনন হলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবেন তারা।

সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের ইউসুফ আলী বলেন, জেলা শহরের নিকটবর্তী এলাকায় বাস করেও আমরা জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকি বছরের ৬ মাস। শালুক খালের পাশে আমার বাড়ি। শালুক খাল খনন হচ্ছে। এবার আশা করছি বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা থাকবে না। তবে নকশা অনুযায়ী খাল খননের দাবি তোলেন তিনি।

শহরের বদ্দীপুর কলোনি এলাকার মো. আলমগীর বলেন, পৌরসভার মধ্যে বাস করে আমরা আধুনিক জীবনযাপন করতে পারি না। কারণ একটাই জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণে বাচ্চারা ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারে না। বেতনা খনন হয়েছে। দেখি এবার আমাদের এলাকা জলমগ্ন থাকে কিনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দাবি, ঠিকাদারের কাছ থেকে ঠিকমতো বুঝে নেওয়া হচ্ছে খনন কাজ। বেতনার বাকি ২৩ কিলোমিটার খনন হলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাবে সাতক্ষীরার কয়েক লাখ মানুষ।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর উপ-প্রকৌশলী গোকুল রায় জানান, ২০১৪ সালে জলাবদ্ধতা নিরসনে সমীক্ষা করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ১, ২, ৬ ও ৮ পোল্ডারে এই খাল ও নদী খনন করা হচ্ছে। মোট ৭১টি খাল খনন করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেতনা ও মরিচ্চাপ খনন করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, মোট ২৯.৩৯৬ কিলোমিটার নদী খনন হচ্ছে। সাতক্ষীরার বাঁকাল ব্রিজ থেকে নৈয়কাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পওর-১-এর অধীনে ২০ কিলোমিটার মরিচ্চাপ নদ খননের জন্য ১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। চুক্তি অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে খননকাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরোপুরি খনন হলে সাতক্ষীরার জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি কৃষি ও মৎস্য ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh