সাড়ে ছয় ঘণ্টা শ্রমের মজুরি ৫০ টাকা

আতিকুর রহমান আতিক, গাইবান্ধা

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২২, ০২:২০ পিএম | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২২, ০২:২১ পিএম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পরচুলা কারখানা।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পরচুলা কারখানা।

অভাব মানুষের নিত্যসঙ্গী। সেই অভাব মোচনের জন্য সে চালায় প্রাণান্তকর চেষ্টা। আর এই অভাবকে কাজে লাগিয়ে দরিদ্র নারীদের দিয়ে প্রতিদিন মাত্র ৫০ টাকা মজুরিতে সাড়ে ছয় ঘণ্টা কাজ করিয়ে নিচ্ছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে হেয়ার ফ্যাশন নামে কয়েকটি পরচুলা কারখানার মালিক। 

জানা গেছে, ফেরিওয়ালাদের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রাম থেকে পণ্যের বিনিময়ে চুল সংগ্রহ করা হয়। এরপর এই চুল থেকে পরচুলা তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের পূর্ব বাছোহাটি গ্রামের প্রবাসী আজিজুল হকের ভাড়া বাসায় চলছে পরচুলা তৈরির কারখানা। সেখানে কাজ করছেন রিনা (২২) ও রামগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী চাঁদনীসহ ১০- ১২ জন। তারা জানায়, সকাল ৭টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অগোছালো চুলগুলো গোছানোর কাজ করতে হয়। বিনিময়ে দৈনিক ৫০ টাকা হিসেবে মাসে এক হাজার ৫০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়।

এমঅ্যান্ডএন হেয়ার ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব হোসেন বলেন, আমার ৯টি কারখানা রয়েছে। নারী শ্রমিক রয়েছেন ৭০- ৮০ জন। সকাল ৭টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত কাজ করেন তারা। প্রত্যেক শ্রমিককে হাজিরার জন্য কার্ড দেওয়া আছে। দৈনিক ৫০ টাকা হিসেবে মাসে এক হাজার ৫০০ টাকা বেতন দেওয়া হয় তাদের। সাড়ে ৬ ঘণ্টা কাজ করে মাত্র ৫০ টাকা মজুরি কম হয়ে যায় না- এমন প্রশ্নে একটু ইতস্তত বোধ করেন বিপ্লব হোসেন।

ঢাকায় পাঠানোর জন্য প্রস্তুত চুলের গোছা দেখিয়ে বলেন, কারখানায় আমিসহ ৪ জন কাজ করি। আমার বেতন ২০ হাজার টাকা, আলী হোসেনের ৬ হাজার টাকা, জাহিদের ১২ হাজার এবং নাঈম পায় ৮ হাজার টাকা। মালিক ও তার পুরুষ কর্মচারীদের বেতন এবং নারী শ্রমিকদের মাসিক মজুরির পার্থক্যই বলে দেয় নারী ও পুরুষের মজুরি বৈষম্য কতটা প্রকট! স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন ওই নারী শ্রমিকরা।এছাড়াও উপজেলার পিনুর মোড়, থেলথেলার বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আরও কয়েকটি এমন হেয়ার ফ্যাশন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh