এশিয়ার ক্রেতারা গম আমদানিতে অস্ট্রেলিয়ার দিকে ঝুঁকছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২২, ০৩:৫৭ পিএম | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২২, ০৩:৫৭ পিএম

গম। প্রতীকী ছবি

গম। প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন বাড়িয়েছে। এর ফলে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি আবারো অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ কারণে এশিয়ার ক্রেতা দেশগুলো অস্ট্রেলিয়ার দিকে ঝুঁকছে। এরই মধ্যে দেশটি থেকে কয়েক কার্গো গম আমদানির চুক্তি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

তথ্য বলছে, অস্ট্রেলিয়ায় এরই মধ্যে গম উত্তোলন শুরু হয়েছে। দেশটি এবার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছে। তবে গড় মাত্রার চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে প্রোটিনের পরিমাণ তুলনামূলক কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগরীয় গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ আগামী ১৯ নভেম্বর শেষ হতে চলেছে। চুক্তিটি সম্প্রসারণ দিয়ে সন্দিহান বাজারসংশ্লিষ্টরা। ফলে সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। ইউক্রেনের গম রপ্তানি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় এশিয়ার ক্রেতারা অস্ট্রেলিয়ার বাজার থেকে গম আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন।

এদিকে ভুট্টার আন্তর্জাতিক বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। এর ফলে ক্রেতারা বিকল্প উৎস থেকে গমকেই বেছে নিচ্ছেন। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটসের হিসাব অনুযায়ী, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেসব ভুট্টা এশিয়ার বাজারে সরবরাহ করা হবে সেগুলো প্রতি টন ৩৪৮ ডলার ৫০ সেন্টে চুক্তি হয়েছে।

শীর্ষ উৎপাদক দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টা উৎপাদন বিপর্যয়ের মুখে। অন্যদিকে মিসিসিপিতে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা রপ্তানিও কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে শ্রমিক সংকটের কারণে রেলপথে রপ্তানিও ব্যাহত হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে যেসব ভুট্টা সরবরাহ করা হবে সেগুলো স্পট মার্কেটের তুলনায় অন্তত ৫-১০ ডলার বেশি মূল্যে চুক্তি করা হচ্ছে। কারণ এ শস্যের বাজারও সংকটে রয়েছে।

ফলে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ গম আমদানিতে অস্ট্রেলিয়ার দিকে ঝুঁকলেও চীন ভুট্টা আমদানি বাড়াচ্ছে। আর দেশটির সাথে বৈরিতা থাকায় চীন ব্রাজিল থেকে ভুট্টা আমদানি বাড়াচ্ছে।

এদিকে রাশিয়া খাদ্যশস্যে রপ্তানি কোটা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে আন্তর্জাতিক বাজারে যেমন সরবরাহ বাড়বে ঠিক তেমনি খাদ্যশস্যের দামও কমে আসবে বলে ধারণা বাজার বিশ্লেষকদের। এর ফলে ইউক্রেনের রপ্তানি নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তায় আশার আলো জাগাচ্ছে দেশটি।

রাশিয়া সাধারণত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে জুনের শেষ সময় পর্যন্ত খাদ্যশস্য রপ্তানিতে কোটা বেঁধে দেয়। উদ্দেশ্য স্থানীয় চাহিদা নিশ্চিত করা। তবে চলতি বছর দেশটি রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন করেছে। প্রাক্কলিত উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৫ কোটি টন। এর মধ্যে ৯ কোটি টনই গম। অর্থাৎ খাদ্যশস্যই নয়, গম উৎপাদনও রেকর্ড সর্বোচ্চে উন্নীত হতে যাচ্ছে। এর ফলে কোটা ছাড়াই স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশটি বিপুল পরিমাণ শস্য রপ্তানি করতে পারবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh