গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে ৬০% টেক্সটাইল মিল ঝুঁকিতে: বিটিএমএ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২২, ১১:৩০ পিএম | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২, ১১:৩১ পিএম

বস্ত্রকলগুলো গ্যাস সংকটের কারণে দিনে গড়ে ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকছে। ফাইল ছবি

বস্ত্রকলগুলো গ্যাস সংকটের কারণে দিনে গড়ে ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকছে। ফাইল ছবি

গ্যাস-সংকটের কারণে বস্ত্রখাত মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী।

তিনি বলেন, গাজীপুর ও নরসিংদীর শিল্পাঞ্চলে প্রতিদিন গড়ে ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকছে না। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ৬০ শতাংশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রুত সংকট সমাধান করে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ করা না হলে অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। চাকরি হারাবেন শ্রমিকরা। ব্যাংকও তাদের পুঁজি হারাবে।

আজ শনিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএ সহ-সভাপতি ফজলুল হক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিচালক মোশাররফ হোসেন, আবদুল্লাহ জোবায়ের, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মোনালিসা মান্নান প্রমুখ।

বিটিএমএ’র সভাপতি বলেন, গত মার্চে গ্যাসের সংকট শুরু হয়। জুলাইয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। আর আগস্ট থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, নরসিংদীর মাধবদী, ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুরের শ্রীপুর, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বস্ত্রকলগুলো গ্যাস সংকটের কারণে দিনে গড়ে ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকছে। এতে করে কারখানাগুলো উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ৩০-৪০ শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গ্যাস সংকটে উৎপাদন এখন তলানীতে গিয়ে পৌঁছেছে। হুমকির মুখে পড়েছে ১ কোটি ৬০ হাজার ডলারের বিনিয়োগ। ১০ লাখ মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত। উৎপাদন করা না গেলে শ্রমিক ছাঁটায়ের শঙ্কাও তীব্র হবে।

মোহাম্মদ আলী বলেন, নিট পোশাকের ৮০ ভাগ কাঁচামালের যোগান দেয় স্থানীয় স্পিনিং শিল্প। গেল বছরেই এই খাত থেকে যোগান দেওয়া হয় ৭ বিলিয়ন মিটার কাপড়। যার আনুমানিক দাম ৮ বিলিয়ন ডলার। তাই এই শিল্পখাতকে বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। প্রতি কেজি সুতা উৎপাদনে ১ ডলার ২৫ সেন্ট খরচ হলেও দিনের অর্ধেক সময় কারখানা বন্ধ থাকার কারণে তা বেড়ে আড়াই ডলারে গিয়ে পৌঁছেছে বলে জানান বিটিএমএ সভাপতি।

তিনি বলেন, কাপড় রং করার ডাইং কারখানাগুলোও লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জ্বালানির সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যদি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিতো, তাহলে আজকে এ অবস্থা তৈরি হতো না। পেট্রোবাংলা আশ্বস্ত করেছিল, অক্টোবরের শুরু থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে। নভেম্বরে আরও ভালো থাকবে। ডিসেম্বরে কোনো সংকট থাকবে না। কিন্তু উন্নতি তো দূরে, অক্টোবরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আমাদের শঙ্কা, আগামী দুই মাসে গ্যাসের সংকট আরও বাড়বে।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, এ মুহূর্তে দেশের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ৩ হাজার রাখা গেলে শিল্প মালিকরা গ্যাস পাবেন। তাতে টেক্সটাইলখাতে রপ্তানি স্বাভাবিক রাখা যাবে।

গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যদি আমাদের ২ লাখ ডলারের গ্যাস দেয় আমরা ৪৮ লাখ ডলারের রপ্তানি আয় এনে দেবো।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh