লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২২, ১০:৪৬ পিএম
পাটগ্রাম সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি
করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে আবারো বসেছে দুই বাংলার মিলন মেলা। আজ মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে কালী পূজা উপলক্ষে উপজেলার বাউরা সীমান্ত এলাকায় এ মেলার আয়োজন করা হয়। এসময় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার দু-পাশে দাঁড়িয়ে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করেন দুই বাংলার মানুষ। ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) -এর যৌথ উদ্যোগে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে বাউরা সীমান্ত এলাকায় শুরু হওয়া এ মিলন মেলা চলে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত। শত শত মানুষ সীমান্তে ছুটে আসেন রক্তের টানে। প্রিয়জনদের একনজর দেখতে পেয়ে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তবে অনেকে ছুটে এসেও, প্রিয় মানুষটিকে দেখতে না পেয়ে চোখের জল ফেলে বাড়ি ফিরেছেন। আবার অনেকেই স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের স্মৃতিটুকু ধরে রাখতে তুলেছেন ছবি।
সকাল সাড়ে ৯ টায় দীপালী রানী দেখা করেন তার খালাতো বোনের ছেলে জয়ধর বাবুর সঙ্গে। ভাগ্নের সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে দীপালী রানী জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় তার খালা-খালু ভারতে চলে যায়। সেই সময় ছোট খালা ও দুই বোনের সঙ্গে শেষ দেখা হয় তার। কয়েক বছর আগেও একবার খালাতো বোনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। গত বছর তার খালাতো বোন মারা গেছেন, দেখতে যেতে পারেননি তিনি।
শুধু দীপালী রানী নয়, তার মত শত শত মানুষ সীমান্তে ছুটে এসেছেন আপনজনের টানে। দীর্ঘদিন পর কাছের লোকজনদের দেখতে পেয়ে আবেগ-সিক্ত হন। একে অপরকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সীমান্তে এসেছেন শফিকুল ইসলাম ও রবিন্দ্র নাথ। তারা জানান, বছরে একটা দিন, কালী পূজা উপলক্ষে আমরা আপন জনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাই। আমাদের আশা এই উদ্যোগ যেন অব্যাহত থাকে। আইনের জটিলতায় যেন এ মিলন মেলা বন্ধ না হয়।
পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রবিউল হক মিরন বলেন, সীমান্তে প্রতিবছর কালী পূজা উপলক্ষে দুই বাংলার মিলন মেলা বসে। এতে অনেকেই তাদের পুরাতন বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। আনন্দিত হন, খুশি মনে বাড়ি ফিরেন তারা। এটা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন।