চুল কাটতে গিয়ে বাড়ি ফিরলেন ২২ বছর পর

মায়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে চুল কাটার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার খোর্দ্দ ধোপাদী গ্রামের সাদেক বিশ্বাস। কিন্তু আর ফেরা হয়নি তার। স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ব্যর্থ হয়েছেন। সেই ফেরা তিনি ফিরে আসলেন ২২ বছর পর। সাদেককে কাছে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খুবই খুশি।

কিন্তু সাদেক বাড়ি ফিরে বাবা-মাকে পাননি। দুজনই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।

পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২২ বছর আগে পার্শ্ববর্তী চৌগাছা বাজারে চুল কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল সাদেক। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপর হঠাৎ স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর মাধ্যমে জানা যায় সাদেক বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানায় আছে।

শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা রওনা দেন মোরেলগঞ্জে। এরপর তারা সাদেককে শনাক্ত করেন। পরে মোরেলগঞ্জ থানার ওসি সাদেকের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। সাদেকও তার পরিবারের সদস্যদের চিনতে পেরেছেন।

২২ বছর আগে হারানো সাদেককে দেখতে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিরা ভিড় করছেন। পরিবারের সদস্যরা আনন্দে আত্মহারা।

সাদেকের বড়ভাই সামছুল ইসলাম জানান, তার ভাই সাদেক কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু কিছুটা কথা বলতে পারেন। ২২ বছর আগে সে হারিয়ে যান। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি। এরপর গতকাল এক সংবাদকর্মীর মাধ্যমে খবর পেয়ে শুক্রবার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানা থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। ছোট ভাইকে পেয়ে তারা অনেক খুশি। 

আরেক ভাই দাউদ হোসেন জানান, ২২ বছর পর হারানো ভাইকে পেয়ে আমরা খুবই খুশি। এখন তার চিকিৎসা করানো হবে। সাদেকের জন্য আমরা অনেক কষ্ট করেছি। বাবা ও মা মৃত্যুর আগেও সাদেকের কথা বলতেন কিন্তু তারা সাদেককে দেখে যেতে পারলেন না।

স্থানীয় সংবাদকর্মী হাবিব উসমান জানান, মোরেলগঞ্জ থেকে এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ফোন করে সাদেকের বিষয়টি জানান। এরপর তিনি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালে তারা মোরেলগঞ্জ গিয়ে সাদেককে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

১১নং রাখালগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু জানান, দীর্ঘ ২২ বছর আগে খোর্দ্দ ধোপাদী গ্রামের সাদেক হারিয়ে যান। সাংবাদিক হাবিব উসমান খবর পেয়ে ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর তারা মোরেলগঞ্জ গিয়ে সাদেককে নিয়ে আসেন।