বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ০৩:৫০ পিএম
এবার বরিশাল-ভোলা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
আগামী ৫ নভেম্বর বরিশাল নগরীর বেলস্ পার্ক মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশকে সামনে রেখে দাবি আদায়ের অজুহাতে এরমধ্যে বাস এবং পরে তিন চাকার যানবাহনে ধর্মঘট ডেকেছে শ্রমিক সংগঠন।
এরপর সমাবেশের দুইদিন বাকি থাকতে এবার বরিশাল-ভোলা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভোলার উদ্দেশে বরিশাল নদী বন্দর থেকে কোনো যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
লঞ্চ মালিক সমিতি লঞ্চ বন্ধের কোনো কারণ না জানাতে পারলেও বিএনপি নেতাদের দাবি, ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করেই নৌযানগুলো বন্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও বরিশাল ডিসি ঘাট থেকে চলাচল করছে স্পিডবোট। তবে বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেলেও ভোলা থেকে ছাত্রী ছাড়াই ছেড়ে আসছে স্পিডবোটগুলো।
তাছাড়া বরিশাল থেকে ছেড়ে যাওয়া স্পিডবোটগুলোতে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। সব মিলিয়ে দুর্ভোগে পরেছেন বরিশাল-ভোলা রুটের নিয়মিত যাত্রীরা।
সাইফুল মৃধা নামে এক যাত্রী বলেন, ব্যবসায়ীক কাজে সকালে ভোলা যাওয়ার জন্য লঞ্চঘাটে আসি। এসে দেখি ভোর থেকে ভোলায় কোনো লঞ্চ যাচ্ছে না, আবার সেখান থেকেও কোনো লঞ্চ আসেনি বরিশালে।
রাসেল সিকদার নামের একজন স্কুল শিক্ষক বলেন, ভোলায় যাওয়ার উদ্দেশে সকালে লঞ্চ বন্ধের খবর পেয়ে স্পিডবোট ঘাটে আসি। এসময় স্পিডবোট ঘাটে গিয়ে দেখি স্পিডবোট চললেও আপ-ডাউনের ভাড়া রাখছেন বোট চালকরা।
তিনি বলেন, বরিশাল থেকে ভোলা স্পিডবোটের জনপ্রতি ভাড়া ৩০০ টাকা। সে হিসেবে আপ-ডাউনের ভাড়া ৬০০ টাকা। সেখানে ১০০ টাকা কমিয়ে যাওয়ার ভাড়া ৫০০ টাকা করে রাখছেন বোট চালকরা। তাও আবার যাত্রীদের ভোলায় নামিয়ে দিয়ে বোটগুলো ফিরে আসছে যাত্রী ছাড়া। তাই ফিরে আসার অনিশ্চয়তার কারণে আর ভোলা যাননি তিনি।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে স্পিডবোট চালক সাদ্দাম বলেন, যাত্রীদের প্রয়োজনে বরিশাল থেকে ভোলায় যেতে পারলেও ভোলা থেকে যাত্রী আনা যাচ্ছে না। খালি বোট নিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। আসতে যে খরচটা হচ্ছে সেটাই রাখা হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।
এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধের বিষয়ে মালিক সমিতি কিছু না জানালেও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন জানান, ভোলায় আওলাদ নামক একটি লঞ্চে বুধবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে সকাল থেকে শুধু ভোলা রুটে লঞ্চ চলছে না। তবে মেহেন্দিগঞ্জ ও মজুচৌধুরীরহাট রুটের লঞ্চগুলো এখনো চলাচল করছে।
অপরদিকে, ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের কারণেই বন্ধ করা হয়েছে লঞ্চ, এমনটাই বলছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলসিক জাহান শিরিন বলেন, কোন কিছুতেই বরিশালের গণসমাবেশে জনস্রোত ঠেকানো যাবে না। প্রয়োজনে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ পায়ে হেটে, সাইকেলে, ট্রলার ও নৌকায় চেপে আসবে।