বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়ে দেবো: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ০৭:০৫ পিএম | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ০৭:০৯ পিএম

 জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

সরকার বিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি বাড়াবাড়ি করে, তাহলে খালেদা জিয়াকে আবারো জেলে পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও মানবিক কারণে সরকার খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে, তাহলে বেগম খালেদা জিয়াকে আবার জেলে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ। তার ভাই, বোনের জামাই আমাদের কাছে এসেছিল, আমরা মানবিক কারণে তার সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতি মামলা বেগম খালেদার জিয়ার ৭ বছরের সাজা হয়েছে। চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকা সে মেরে খেয়েছে। তার নিজের নামেই রেখে দিয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের মামলা, সেই অরফানেজের নামে বিদেশিদের মোটা অঙ্কের টাকা এসেছিল। একটা টাকাও কোনো এতিম পায়নি, ওই ট্রাস্টেও কোনো টাকা যায়নি।

তিনি বলেন, সব টাকা তার (খালেদা জিয়া) নিজের নামের অ্যাকাউন্টে গেছে। সে কারণে সে ধরা খেয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলা আমরা দিইনি। এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছে। তখন তার প্রিয় ব্যক্তিরাই ক্ষমতায় ছিল। তাদের দেওয়া মামলা, আর সেই মামলায় সাজা পেয়েছে খালেদা জিয়া। বরং আমরা তাকে মানবিক কারণে তাকে বাসায় থাকতে দিয়েছি। 

জেল হত্যা দিবসের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করে খুনিরা থেমে যায়নি, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার নেতাকে হত্যা করেছিল তারা। খুনি মোশতাক-জিয়াই তাদের হত্যা করে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র। জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে পাকিস্তানের যোগসাজশে হত্যাকারীদের লিবিয়ায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়।

জেলারকে হত্যার হুমকি দিয়ে কারাগারে ঢুকে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয় মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, মিটিংয়ের কথা বলে তারা ঢুকতে চায়। কিন্তু তাদের সঙ্গে অস্ত্র ছিল। কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্ত্র নিয়ে ঢোকা যায় না। কিন্তু, তারা অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছিল। গণভবন থেকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, যেভাবে ঢুকতে চায়, সেভাবেই যেন ঢুকতে দেওয়া হয়।

জিয়া এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল বলেই মোশতাক যখন রাষ্ট্রপতি হলো, নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়েই জিয়াউর রহমানকে সেনা প্রধান বানানো হয় বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। 

বিএনপির সাম্প্রতিক গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দলের জন্ম অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে; তারা আবার গণতন্ত্র কী উদ্ধার করবে, সেটাই আমার প্রশ্ন।  

তিনি বলেন, বিএনপির দলটিতে মাথা কোথায়? তারা তো সবাই পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এরা ক্ষমতায় এলে, দেশটাকে কোথায় নেবে, তা কী ভেবেছে দেশবাসী? আর যারা এদের (বিএনপি) কথায় নাচে, তারা জ্ঞান-বুদ্ধি কোথায় রাখে আমি বুঝতে পারি না।

হাওয়া ভবনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় তখন দেশে দুটো সরকার ছিল। একটা খালেদা জিয়ার সরকার আরেকটি হাওয়া ভবনের সরকার। বিএনপি এখন ক্ষমতায় থাকলে ভ্যাকসিন তো দূরের কথা, হাওয়া ভবনে গিয়ে, হাওয়া হয়ে যেতো ভ্যাকসিন! লাশের পর লাশ পড়ে থাকতো।

আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে কোনো অরাজকতা করলে তাদের উচিত শিক্ষা দেয়া হবে। বিএনপি যদি আর একটা মানুষের গায়ে হাত দেয়, তাহলে তাদের ছাড়া হবে না। যেমন কুকুর, তেমন মুগুর না হলে তো চলবে না!

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপপ্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh