পরিবার পরিকল্পনায় নিয়োগ পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ০৯:২৫ পিএম | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ০৯:২৭ পিএম

লালমনিরহাট সরকারি কলেজ। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাট সরকারি কলেজ। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনা অধীন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা না দিয়েও জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের দেয়া ওয়েবসাইটে পাস করা চাকরিপ্রার্থীদের তালিকায় একজনের রোল নম্বর রয়েছে। একবার ফল প্রকাশের পর উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা বাড়িয়ে আবারও ফল প্রকাশ করা হয়েছে। 

এদিকে এক চাকরিপ্রার্থী লিখিত পরীক্ষার খাতা পুনমূল্যায়নের আবেদন করেছেন।

এ ব্যাপারে গত বুধবার বিকেলে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা নিয়োগ কমিটির সভাপতি আবু জাফরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জান্নাতুন ফেরদৌসী নামের অপর এক চাকরিপ্রার্থী। 

এদিকে তানজিনা আক্তার নামে অপর এক চাকরিপ্রার্থী বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত পরীক্ষার খাতা পুনমূল্যায়নের আবেদন করেছেন।

গত ২৮ অক্টোবর লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অধীন চতুর্থ শ্রেণি আয়া ও পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং তৃতীয় শ্রেণি পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে লালমনিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা ২০২১ অনুষ্ঠিত হয়। ওই ৩টি পদের মোট ১৮৫১জন চাকরি প্রার্থী আবেদন করেন। 

ওই নিয়োগ পরীক্ষায় পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে আবেদন করা চাকরিপ্রার্থী মুনাফা খাতুন (রোল নম্বর ১২০৫১১৫৫) জানান, আমি এক সপ্তাহ আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিয়েছি। এ কারণে লালমনিরহাটে গিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় পাস করা চাকরিপ্রার্থীদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে আমার রোল নম্বরও রয়েছে। 

মুনাফা খাতুন বলেন, আমার ননদ জান্নাতুন ফেরদৌসীর রোল নম্বর ১২০৫১১৫৬। আমার রোল নম্বর ১২০৫১১৫৫। দুটি রোল নম্বর পাশাপাশি হওয়ায় ফল মুদ্রণে ভুল হতে পারে। সঠিকভাবে তদন্ত করে ভুলটি সংশোধন করে আমার ননদকে কৃতকার্য দেখানো হোক। তিনি খুব ভালো পরীক্ষা দিয়েছে বলেও দাবি করেন মুনাফা খাতুন।

এদিকে গত ৩০ অক্টোবর লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে ১৬জন, পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে ১৭৪জন এবং আয়া (মহিলা) পদে ১৫জন চাকরি প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করে রোল নম্বর প্রকাশ করা হয়। অজ্ঞাত কারণে এর দুইদিন পর পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের একই ওয়েবসাইটে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে ১৬জন, পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে (৫জন প্রার্থীর রোল নম্বর বাড়িয়ে) ১৭৯জন এবং আয়া (মহিলা) পদে ১৫জন চাকরি প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করে আবারও রোল নম্বর প্রকাশ করা হয়। দ্বিতীয় বার প্রকাশিত ফলাফলে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত বাড়তি রোল নম্বরগুলো ১২০৫০৫৩৩, ১২০৫০৫৬১, ১২০৫০৫৯০, ১২০৫০৫৯৯, ১২০৫০৬০০। তবে দ্বিতীয় বার সংশোধিত ফলাফলে চাকরিপ্রার্থী জান্নাতুন ফেরদৌসীর রোল নম্বর ১২০৫১১৫৬ অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট সরকারি কলেজের কলাভবনের তৃতীয় তলায় ৩১৮ নম্বর কক্ষে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন অভিযোগকারী জান্নাতুন ফেরদৌসী। একই পদে পরীক্ষার্থী ছিলেন মুনাফা খাতুন। গত ২১ অক্টোবর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। এ কারণে মুনাফা খাতুন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। ৩০ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হয়। কিন্তু তার রোল নম্বরও কৃতকার্য চাকরিপ্রার্থীদের তালিকায় প্রকাশ করা হয়।

এ বিষয়ে নিয়োগ কমিটির সদস্য ও লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে এ ব্যাপারে  লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর  বলেন, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া ফলাফলে ভুলবশত ১২০৫১১৫৬ রোল নম্বরের স্থলে ১২০৫১১৫৫ প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও উত্তীর্ণ আরো কয়েকজনের নাম বাদ পড়ে ওই ফলাফলে। একারণে দ্বিতীয় বার মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh