সংসদে সাক্ষ্য আইনের সংশোধনী পাস

ধর্ষণ মামলায় ভুক্তভোগীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ১০:৫৫ পিএম

জাতীয় সংসদের অধিবেশন কক্ষ। ছবি: ফাইল

জাতীয় সংসদের অধিবেশন কক্ষ। ছবি: ফাইল

আদালতের অনুমতি ছাড়া ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টা মামলায় জেরার সময় ভুক্তভোগীর নৈতিক চরিত্র ও যৌন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না, এমন বিধান যুক্ত করে  সাক্ষ্য আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। নতুন আইনে বিচারকাজে বিভিন্ন ডিজিটাল তথ্যকেও সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ এই আইনে যোগ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে  ‘এভিডেন্স অ্যাক্ট ১৮৭২ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২২’ কণ্ঠভোটে পাস হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি সংসদে তোলেন। পরে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিস্পত্তি করেন।

বিএনপিসহ বিরোধী দলের বেশিরভাগ সদস্যই নতুন আইন পাশের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংশোধনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এই সংশোধনী পাস হওয়ার ফলে বিদ্যমান সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারা বাতিল হবে।

ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন ধর্ষণ কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা।

বিলে ক্রস এগজামিনেশন বা জেরার সময় প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টা মামলার ভিকটিমকে তার নৈতিক চরিত্র বা অতীত যৌন আরচণ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি আদালত মনে করে এই ধরনের প্রশ্ন করা প্রয়োজন, তাহলে আদালতের অনুমতি নিয়েই কেবল তা করা যাবে।

মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই ঔপনিবেশিক আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ ছাড়া সাক্ষ্য আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও নতুন ধারা যুক্ত করে মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনেরও সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কেউ যাতে ভুয়া বা জাল সাক্ষ্যপ্রমাণ ডিজিটাল মাধ্যমে হাজির করতে না পারে, আদালত যদি মনে করে যে কোথাও আপত্তিজনক কিছু আছে অথবা কেউ যদি আপত্তি তোলে, তাহলে ওই সাক্ষ্য-প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষা করা যাবে।

এই আইন পাশের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আদালতে মামলাজট নিরসনে তিনি শালিসি বোর্ড গঠনের প্রস্তাব করেন।

একই দলের পীর ফজলুর রহমান বলেন, গত ৩০ জুন পর্যন্ত আদালতে বিচারাধীন মামলা ৪১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫৩টি। এই মামলার সংখ্যা বাড়ছে। এই মামলা দ্রুততম সময় নিষ্পত্তিতে বিকল্প চিন্তা করা দরকার।

বিএনপি দলীয় সদস্য হারুনুর রশীদের এক বক্তব্য প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, মিথ্যা অভিযোগে মামলা হতে পারে। কিন্তু কেউ মিথ্যা অভিযোগে মামলা করলে আইনে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করারও সুযোগ রয়েছে। এখন আইনের মাধ্যমেই দেশ চলছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিরোধী দলকে টার্গেট করে এই আইন করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এটি করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh