নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২২, ০১:৪৪ পিএম
চিনি। ফাইল ছবি
নিত্য-খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল দেশের সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে চিনির দাম প্রতি কেজিতে রেকর্ড বেড়ে ১২৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। গত বছরের তুলনায় এখন চিনির দাম বাড়লো ৪৫ শতাংশ।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে দেখা গেছে, সরবরাহ কম থাকায় চিনির দাম বেড়েছে।
সরেজমিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২৫টি খুচরা দোকানে গিয়ে ১০টি দোকানে চিনি পাওয়া যায়নি।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, চিনি, বিশেষ করে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ চাহিদা ও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম।
গত এক সপ্তাহে ঢাকা ও চট্টগ্রামে চিনির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
টিসিবির তথ্যে দেখা গেছে, চিনির দাম কেজিপ্রতি ২২ শতাংশ বেড়ে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা হয়েছে, যা এক মাস আগেও ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা।
চিনির সরবরাহ কমায় ও দাম বাড়ায় গত ৩ সপ্তাহ ধরে মিষ্টিজাত পণ্যের দামও বেড়েছে।
চিনি পরিশোধনকারীরা জানান, চিনির পরিশোধন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। একইসঙ্গে ডলারের ঘাটতির কারণে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা না পাওয়ায় অপরিশোধিত চিনি আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কিছু এলাকার খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা জানান, খোলা চিনির সরবরাহও কমে গেছে।
বাসাবোর নন্দীপাড়া এলাকার মুদি দোকানদার সরোয়ার হোসাইন বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহকারীদের কাছ থেকে চিনি পাচ্ছি না। তাই দাম বেড়েছে। গত দুই দিন ধরে বিক্রি করার জন্যও আমি চিনি পাচ্ছি না।’
মিরপুরের পল্লবী এক্সটেনশন এলাকার খুচরা বিক্রেতা আবু জাফর জানান, তারা ১২০ টাকা কেজি দরে খোলা চিনি ও ১২৫ টাকা কেজি দরে প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি করছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ডিলাররা গত দুই সপ্তাহ ধরে গ্রাহকদের চাহিদার তুলনায় কেবল ২০ শতাংশ সরবরাহ করছেন।’
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের মালিক মনোয়ার হোসেন জানান, চাহিদা অনুযায়ী ডিলারদের কাছ থেকে চিনি পাচ্ছেন না তারা।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ-চাকতাই পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চিনির দাম প্রতি মণে (প্রায় ৩৭ কেজি) ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি মণ চিনি এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৭৫০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে তা বেড়ে এখন চার হাজার থেকে চার হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাকাউন্টস বিভাগের প্রধান এস এম মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ডলারের সংকটের কারণে অপরিশোধিত চিনি আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলায় জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এছাড়া, কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে ধারণক্ষমতার চেয়ে অর্ধেক পরিশোধন করা যাচ্ছে।’