ডেঙ্গু রোগীর খাবার

রুবানা শারমীন লুপা

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২২, ১২:৪৬ পিএম

পুষ্টিকর খাবারগুলো রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ছবি: সংগৃহীত

পুষ্টিকর খাবারগুলো রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রথম মানবদেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় খাবার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা বাঞ্ছনীয়। প্রথমত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। 

প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার: মাছ, মুরগির মাংস, চর্বিহীন লাল মাংস (গরু, ছাগল), ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যে প্রোটিন বেশি থাকে। এই খাবারগুলো রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

আয়রনসমৃদ্ধ খাবার: রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের জুড়ি নেই। পালংশাক, সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, মিষ্টি কুমড়া, ডালিম, মটরশুঁটি, ছোলা, মসুরডাল, কচুশাক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ আয়রণ রয়েছে, যা রোগীর শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে।

ভিটামিন কে জাতীয় খাবার: রক্তক্ষরণ ঝুঁকি কমাতে ডেঙ্গু রোগীকে ভিটামিন কে জাতীয় খাবার দিতে হবে। যেমন- সবুজ শাকসবজি, বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদি। এসব খাবারে দরকারি খনিজ উপাদান ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণও বেশি থাকে। তাই প্রতিদিন রোগীকে এই খাবারগুলো পরিমাণমতো খাওয়াতে হবে।

ভিটামিন বি ১২: ভিটামিন বি-১২-এর অন্যতম উৎস ডিম, দুধ, মাখন, পনির, কম চর্বিযুক্ত দই। 

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার: ভিটামিন সি জাতীয় খাবার রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা স্বাভাবিক রাখতেও কার্যকর। কমলা, মাল্টা, আপেল, পেয়ারা, আমড়া, পেঁপে, আম, আনারস, আঙুর, জাম ইত্যাদি ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। ভিটামিন সি একটি কার্যকারী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ডেঙ্গু রোগীকে প্রতিদিন এই ফলগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়াতে হবে।

পানির পরিমাণ ঠিক রাখা: ডেঙ্গু রোগীদের পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীকে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে ডাবের পানি ও বিভিন্ন ধরনের ফলের রস উপকারী। এ ছাড়া জাউভাত, খিচুড়ি, বিভিন্ন ধরনের স্যুপ খেতে দিতে হবে। প্রয়োজন বুঝে ডেঙ্গু রোগীকে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশনও (ওআরসি) দেওয়া যেতে পারে।

যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে: তৈলাক্ত ও ভাজা-পোড়া খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার, মসলাযুক্ত খাবার, আচার, চিনিযুক্ত খাবার, কাঁচা সবজি ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, চা-কফি, কোকো, অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ইত্যাদিও এড়াতে হবে।

পুনরায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের বিশেষ সতর্কতা: সুস্থ হয়ে গেলেন মানেই রোগী যে ঝুঁকিমুক্ত, তা কিন্তু নয়। কেউ যখন ডেঙ্গুর একটি ধরনে আক্রান্ত হয়, সেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেহে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা জন্ম নেয়; কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তিনি আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবেন না।

বরং তিনি এবার ডেঙ্গুর শক্তিশালী ধরনগুলোতে আক্রান্ত হতে পারেন। তখন হেমোরেজিক ফিভার বা শক সিন্ড্রমের মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ বারের সময় ডেঙ্গুর শক্তিশালী অন্য কোনো ভ্যারিয়্যান্ট থেকেও পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ থাকে। তাই সাবধানে থাকবেন। ঘর-বাইরের চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh