অন্যকে উপদেশ দিয়ে নিজে না করলে যে ক্ষতি হয়

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২২, ০২:১৯ পিএম

ধর্ম: প্রতীকী ছবি

ধর্ম: প্রতীকী ছবি

অন্যকে সৎ উপদেশ দেওয়া ভালো কাজ। উপদেশ অনুযায়ী আমল করা উচিত কিন্তু আমলহীন উপদেশ নিন্দনীয় কাজ। শাস্তি ভোগের কারণ। 

কোরআন সুন্নাহ হলো ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। আর যারা উপদেশ দেওয়া সত্ত্বেও নিজেরা তা থেকে বিরত থাকে তাদের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা উপদেশ দেওয়া সম্পর্কে বলেন-

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা পূণ্যশীলতা ও তাকওয়ার কাজে একে অপরকে সাহায্য কর।’ (সুরা মায়েদা: আয়াত ২)

বান্দা যখন নিজে ভালো কাজ করার পাশাপাশি অন্যের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তখন আল্লাহ তাআলাও ওই ব্যক্তির প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। হাদিসে এসেছে-

‘একজন মুসলমান যতক্ষণ পর্যন্ত তার অপর মুসলমান ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে, ততক্ষণ আল্লাহও তার সাহায্যে হাত বাড়িয়ে রাখেন।’ (মুসলিম, নাসাঈ, তিরমিজি)

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি (লোকদের) ভালো কাজের উপদেশ দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলে কিন্তু নিজেরাই উপদেশ অনুযায়ী ভালো কাজ করে না এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত হয় না, তাদের সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘তোমরা লোকদেরকে ন্যায়ের পথ অবলম্বন করতে বল; কিন্তু নিজেদের কথা ভুলে যাও। অথচ তোমরা কিতাব অধ্যয়ন করতে থাক। তোমরা কি বিচার-বুদ্ধিকে কোনো কাজেই লাগাও না?’ (সুরা বাকারা: আয়াত ৪৪)

বর্ণিত আয়াতের ব্যাখ্যায় হজরত কাতাদা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, বনি ইসরাঈলরা মানুষকে আল্লাহর আনুগত্য, তাকওয়া ও কল্যাণের কাজের আদেশ করতো; অথচ নিজেরা এর উল্টো চলতো। এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাদের এমন কাজকে ভর্ৎসনা করেছেন। 

এ বিষয়টি সম্পর্কে ইসলামি স্কলাররা বলেন, ভালো কাজের আদেশ একটি বিষয় এবং ভালোর ওপর আমল করা অন্য বিষয়। প্রতিটি কাজের জন্য পৃথক পৃথক বিনিময় রয়েছে।

তবে ইসলাম মনে করে, ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ হতে বারণকারীকে অবশ্য অধিকতর পরহেজগার হওয়া বাঞ্ছনীয়। মুত্তাকি ব্যক্তির দাওয়াত ভালো ফল বয়ে আনে। পক্ষান্তরে নিজে আমল না করে অপরকে দাওয়াত দেওয়া যদিও জায়েজ, তবুও তা নিন্দনীয়। এ ধরনের ব্যক্তিদের দাওয়াত ফলদায়ক নয়। আর এ শ্রেণির মানুষের জন্য জাহান্নামের কঠিন শাস্তি রয়েছে। এ শাস্তি সম্পর্কে হাদিসে পাকে আরও এসেছে-

হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘ইসরার (মিরাজ) রাতে আমি এমন একশ্রেণির মানুষের কাছ দিয়ে গমন করলাম, যাদের জিহ্বাকে জাহান্নামের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছে। আমি জিবরাঈলকে (আ.) জিজ্ঞাসা করলাম, ওরা কারা? তিনি বললেন, এরা হলো তোমার উম্মতের দুনিয়াদার বক্তা।

তারা যেসব ভালো কাজের আদেশ করতো, তা নিজেরা ভুলে বসতো, অথচ তারা কিতাব পাঠ করছে। তবুও কি তারা বুঝবে না।’ (মুসনাদে আহমাদ)

উল্লেখিত হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, অন্যকে উপদেশ দেয়ার আগে সে উপদেশ নিজের মাঝে বাস্তবায়ন করা জরুরি। এতে দুটি উপকারিতা রয়েছে।

১. হাদিসে ঘোষিত কষ্ট বা শাস্তি থেকে মুক্ত থাকা যাবে।

২. নিজে আমল করার পাশাপাশি তা যদি অন্যকে করার জন্য বলা হয়, তবে তার নসিহত যথাযথ পালিত হবে। বা কোনো আমল করা হয় তা যথাযথভাবে সম্পাদন হবে। ওই ব্যক্তির এ নসিহত যথাযথ বাস্তবায়ন হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh