ভাঙতে পারে যেসব রেকর্ড

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২২, ০৩:১৪ পিএম

 ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। ছবি: সংগৃহীত

ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। ছবি: সংগৃহীত

রেকর্ড হয় ভাঙার জন্যই। আর সেজন্যই রেকর্ড নিয়ে উন্মাদনাটাও থাকে বেশি। সেই রেকর্ডটা বিশ্বকাপের হলে তো গুরুত্ব-মহাত্ব বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

সে কারণে  বলাই যায়- ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। এই ভাঙা গড়ার খেলায় ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলে ভাঙতে পারে দলীয় এবং ব্যক্তিগত বেশ কিছু রেকর্ড।  বিশ্বের বেশ কিছু খেলোয়াড় এবং বেশ কয়েকটি দেশকে হাতছানি দিচ্ছে পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনা।

ফিফা ডট কম তেমনই ১০টি উল্লেখযোগ্য রেকর্ড তুলে ধরেছে, যেগুলো কাতার বিশ্বকাপে গড়া হতে পারে নতুন করে। কাতার বিশ্বকাপ শুরু হতে আর বেশি দিন বাকি নেই। নভেম্বর-ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। তার আগে দেখে নেয়া যাক সেই ১০টি রেকর্ড, যে রেকর্ডগুলো ভেঙে কাতারে লেখা হতে পারে নতুন করে।

চ্যাম্পিয়নদের জন্য পরের আসরগুলো যেন মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম। গত ৩টি বিশ্বকাপেই গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয় ইতালি, ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয় স্পেন এবং ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয় ২০১৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। এবার কী হবে? বলা বাহুল্য, এবার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। তাই তাদের সামনে নতুন রেকর্ড গড়া-ভাঙা দুটোরই সুযোগ রয়েছে।


পর্তুগালের সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এর আগে ৪টি বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই গোল করার অসাধারণ কীর্তি গড়েছেন। যে রেকর্ড রয়েছে কেবল পেলে, উই সিলার এবং মিরোস্লাভ ক্লোসার। কাতার বিশ্বকাপে একটি গোল করতে পারলেই বাকি তিনজনকে পেছনে ফলে রোনালদো গড়ে ফেলবেন একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ৫টি বিশ্বকাপে গোল করার অনন্য রেকর্ড। 

১০

খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের পর দিদিয়ের দেশম কোচ হিসেবেও বিশ্বকাপ জিতেছেন ফ্রান্সের হয়ে। কোচ হিসেবে এরই মধ্যে বিশ্বকাপে ১২টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন। কাতার বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া ৩২ দলের কোচদের মধ্যে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে কোচিং করানোর রেকর্ডটি দেশমের দখলে। 

এর মধ্যে বিশ্বকাপে কোচ হিসেবে জিতেছেন ৯টি ম্যাচ। আর মাত্র একটি জয় তাকে নিয়ে যাবে ১০ম জয়ের মাইলফলকে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যে কীর্তি আছে মাত্র ৬ কোচের। তারা হলেন- হেলমুট স্কন, লুই ফেলিপে স্কলারি, মারিও জাগালো, জোয়াকিম লো, কার্লো আলবার্তো পেরেইরা এবং অস্কার তাবারেজ। মানে কাতারে ফ্রান্স একটা ম্যাচ জিতলেই ইতিহাসের সপ্তম খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তির ভাগিদার হবেন দেশম।

১৯

আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি এখন পর্যন্ত চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন। বিশ্বকাপের আসরে এখন পর্যন্ত ১৯টি ম্যাচ খেলেছেন পিএসজি তারকা। কাতারে আর্জেন্টিনার হয়ে আর মাত্র দুটি ম্যাচ জিততে পারলেই মেসি ছুঁয়ে ফেলবেন স্বদেশি  কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার ২১ ম্যাচ খেলার রেকর্ড।

যদি মেসির আর্জেন্টিনা কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে এবং তিনি দলের হয়ে সাত ম্যাচেই খেলেন, তা হলে মেসি গড়ে ফেলবেন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ২৬টি ম্যাচ খেলার নতুন রেকর্ড। ভেঙে দেবেন জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্যাথাউসের রেকর্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৫টি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি এখন লোথার ম্যাথাউসের দখলে।

২০

বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে মাত্র ১১ জন ফুটবলার ২০ বা তার বেশি ম্যাচ খেলেছেন। আর্জেন্টাইন লিওনেল মেসির মতো খেলোয়াড় এই তালিকায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন। ২০ ম্যাচের মাইলফলক ছুঁতে মেসির দরকার আর মাত্র একটি ম্যাচ। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দরকার ৩টি ম্যাচ। মানে পর্তুগালের হয়ে গ্রুপপর্বের তিনটি ম্যাচই খেলতে পারলে তিনিও নাম লেখাবেন এই তালিকায়।।

২৭

বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ২৭ ম্যাচ হারের রেকর্ড মেক্সিকোর। এখন পর্যন্ত ১৬টি বিশ্বকাপে মোট ৫৭টি ম্যাচ খেলেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি। মেক্সিকানরা বিশ্বকাপে শততম গোল হজম করা থেকে আর মাত্র দুটি ধাপ দূরে অবস্থান করছে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যেটি তৃতীয় সর্বোচ্চ গোল হজম করার ঘটনা। সবচেয়ে বেশি ১২৫টি গোল হজম করেছে জার্মানি। ব্রাজিল হজম করেছে ১০৫টি গোল।

৭০

এশিয়ার দেশ ইরানের বিপক্ষে যখন নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ইংল্যান্ড, তা হবে বিশ্বকাপে তাদের ৭০তম ম্যাচ। সেই সঙ্গে তালিকায় ইউরোপের দেশটি উঠে আসবে পঞ্চম স্থানে। ইকুয়েডরের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামলেই বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ সংখ্যা হয়ে যাবে ৫২টি। সুইডেনকে পেছনে ফেলে তালিকায় সেরা দশে ঢুকে যাবে ডাচরা। সেখানে গড়া হবে নতুন নতুন রেকর্ড।

১০৯

ব্রাজিল এবং জার্মানি, বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা আর সফল দুটি দেশ। এই দুটি দলই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ১০৯টি করে ম্যাচ খেলেছে। এই দুই দলের যে কোনো একটি দল এককভাবে শীর্ষে উঠে যেতে পারে, কিংবা সমানও থাকতে পারে এবার। কাতার বিশ্বকাপেই দেখা যাবে এই রেকর্ডটা লেখা হয়ে যাবে কার পক্ষে।

আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপেই ইতালিকে পেছনে ফেলে উঠে যেতে পারে তৃতীয় অবস্থানে। কারণ এবার যেহেতু ইতালি নেই, সে কারণে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের মুখোমুখি হলেই আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে খেলা হয়ে যাবে ৮৪টি ম্যাচ। ৮৩ ম্যাচ খেলে এখনো তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইতালি।

আর্জেন্টিনার খেলা ম্যাচ সংখ্যা এখন ৮১টি। আর্জেন্টিনা যদি গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচে জয়লাভ করে, তা হলে তাদের মোট জয়ের সংখ্যা হয়ে যাবে ৪৬টি। এ ক্ষেত্রেও ইতালিকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে লিওনেল মেসির দেশটি। বর্তমানে ৪৩ জয় নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা, ৪৫ জয় নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইতালি। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ৭৩টি জয় ব্রাজিলের, ৬৭টি জয় জার্মানির।

১২৩

বিশ্বকাপের ইতিহাসে যে আসর থেকে কার্ড দেখানোর প্রচলন শুরু হয়েছে, তখন থেকে এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনার চেয়ে কোনো দল বেশি হলুদ কার্ড দেখেনি। আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা মোট ১২৩টি হলুদ কার্ড দেখেছেন এখন পর্যন্ত। লাল কার্ড দেখার অবশ্য শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। এখন পর্যন্ত ১১টি লাল কার্ড দেখেছে সেলেসাওরা। লাল কার্ডে দ্বিতীয় স্থানে থাকা উরুগুয়ে দেখেছে ৯টি। এবার তারা নিশ্চয়ই চেষ্টা করবে সংখ্যাটা যেন দুই অঙ্ক স্পর্শ না করে। যা-ই হোক, রেকর্ডটা তখন নতুন করে লেখা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh