জিনকে ‘বোতলে’ বন্দি করলো পুলিশ

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২২, ০৩:১৯ পিএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২২, ০৩:২৮ পিএম

গ্রেপ্তারকৃত জিনের বাদশা সবুজ মিয়া। ছবি: রাজশাহী প্রতিনিধি

গ্রেপ্তারকৃত জিনের বাদশা সবুজ মিয়া। ছবি: রাজশাহী প্রতিনিধি

টিভি বিজ্ঞাপনে জিন দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করা হয় দেখে ফোন, অতঃপর মধ্য রাতে জিনের ফিরতি ফোন আসে। সব সমস্যার সমাধান পেতে মিষ্টি খাওয়ার জন্য ২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা দেয়া হয় জিনকে। সমস্যার সমাধান না হতেই জিন গায়েব, পাওয়া যায় না ফোনেও। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে আইনের আশ্রয় নিলে পুলিশ সেই জিনকে বোতলে বন্দি করতে সক্ষম হয়। 

জিনের নাম সবুজ মিয়া (২৫)। তিনি ভোলা জেলার লালমোহন থানা এলাকার গাজী বাড়ি গ্রামের নান্টু মিয়ার ছেলে। আর জিনের প্রতারণায় টাকা খোয়ানো ভুক্তভোগীর নাম জেসমিন আলম (৫৬)। তিনি রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার পদ্মা আবাসিক এলাকার মনতাজুর রহমানের স্ত্রী।

গত বুধবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকার ডেমরা থানা এলাকার শুকরশী খালপাড়া থেকে জিন সবুজ মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করে চন্দ্রিমা থানা পুলিশের একটি চৌকস দল। এসময় ডিএমপির এপিবিএন অভিযানে সহযোগিতা করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাইটিভির একটি বিজ্ঞাপনের ভিডিওতে সুকৌশলে সবুজ মিয়া তার নিজের মোবাইল নম্বর যোগ করে। সেই ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেন তিনি। সেই ফুটেজে দেওয়া নম্বরে ফোন দিয়ে প্রতারণার শিকার হন ভুক্তভোগী নারী। কয়েক ধাপে সবুজ মিয়াকে প্রায় তিন লাখ টাকা দেন ওই নারী। 

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া চন্দ্রিমা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক ও তালাইমারী ফাঁড়ির ইনচার্জ এটিএম আশেকুল ইসলাম বলেন, বাদীর অভিযোগ পেয়ে তথ্য প্রযুক্তি মাধ্যমে অভিযুক্ত সবুজ মিয়াকে শনাক্ত করা হয়। এরপর অভিযুক্ত জিনে পরিচয় দেয়া সবুজ মিয়াকে ডিএমপির এপিবিএনের সহায়তায় ডেমরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সবুজ প্রতারণার দায় শিকার করেন। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

ভুক্তভোগী জেসমিন বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত পারিবারিক সমস্যায় ভুগছিলাম। সে কারণে টিভিতে সমস্যা সমাধানের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। সেখানে আমি ফোন দিলে তারা বলে আমাদের প্রধান আপনার সাথে কথা বলবে। এরপর আবার একদিন বলে জিন সরাসরি কথা বলে আপনার সমস্যা সমাধান করবে। এরপর কণ্ঠ পরিবর্তন করে বিভিন্ন নম্বর থেকে নিজেকে কামরুখ কামাখ্যা জিন পরিচয় দিয়ে তিনি আমার সাথে কথা বলে। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক দফায় বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় আমার থেকে। পরে তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এরপর পরিবারের সাথে আলোচনা করলে বুঝতে পারি আমি প্রতারিত হয়েছি। 

জানতে চাইলে আরএমপির চন্দ্রিমা থানার ওসি ইমরান হোসেন বলেন, অভিনব কায়দায় নিজেকে জিন পরিচয় দিয়ে এক নারীর সাথে প্রতারণার মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল প্রতারক সবুজ মিয়া। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে আসামি সবুজকে আটক করা হয়। আটকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh