সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২২, ০৫:০৩ পিএম
অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে আন্তঃজেলা বাস শ্রমিকরা। ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
পুলিশ কর্তৃক হয়রানির প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে আন্তঃজেলা বাস শ্রমিকরা। এদিকে পরিবহন শ্রমিকদের আকস্মিক ডাকা এ কর্মবিরতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অনেকেই জেলার প্রত্যন্ত এলাকার এলাকা থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য জেলায় এসে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই কর্মসূচির ডাক দেন পরিবহন শ্রমিকরা। আজ শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে পরিবহন।
এতে সুনামগঞ্জ থেকে রাজধানীসহ কোনো গন্তব্যেই ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার বাস। অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে সিলেট বিকল্প পথে রওনা করেছে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে। গন্তব্যে না গিয়ে বাড়ি ফেরত যেতে হচ্ছে তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার বিকেলে ওয়েজখালী এলাকার সড়ক থেকে শ্যামলী, মামুন ও সাকিল পরিবহনের তিনটি বাস জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় চালক-শ্রমিকরা ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। এজন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আন্তঃজেলা বাস কোথাও যাচ্ছে না।
শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সংস্কার না করে সড়কের পাশে পার্কিং করা বাস জব্দ করায় এবং শ্রমিকদের হয়রানি করায় এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তারা।
ক্ষোভের সাথে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য সুনামগঞ্জ পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে আসা মিয়া হোসেন জানায়, নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার জন্য পরিবার নিয়ে রাত সাতটায় স্ট্যান্ডে এসে শুনি বাস চলবে না। পরে রাতে হোটেলে থেকে সিলেটের উদ্দেশ্য রওনা হচ্ছি। পরে সিলেট থেকে ঢাকা রওনা হব।
পরিবহন মালিক শ্রমিকরা জনস্বার্থে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। যাত্রী সুবিধা উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেই, আর নিজেদের স্বার্থে ধর্মঘট যা অযৌক্তিক।
আরকে যাত্রী রফিক মিয়া জানান, এটা কোনো কথা হল মন যা চায় তাই করবে পরিবহন সেক্টরের নেতা আর কিছু শ্রমিক নেতারা। কিছু দিন আগে দুইদিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়ে চরম দুর্ভোগে ফেলে দেয় আজ আবার এই অবস্থা, এর থেকে বের হতে হবে। পরিবহন সেক্টরের মালিক শ্রমিকদের কাছে মনে হচ্ছে সবাই জিম্মি।
আরেক যাত্রী জসিম মিয়া জানান, হঠাৎ করেই কোন সিদ্ধান্ত ও কোন কারণ ছাড়াই তারা তাদের স্বার্থে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়। স্বাধীন দেশে বারবার পরিবহন সেক্টরের নেতা শ্রমিকদের এমন খামখেয়ালি কাজ চলতে দেয়া মানেই সরকার ও দায়িত্বশীলরা পরিবহন সেক্টরের সাথে কোনভাবেই পারে না। কিন্তু আমরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।
পরিবহন শ্রমিক নেতা সুজাউল কবির জানান, হয়রানির বিচার না করায় সব ধরনের গণপরিবহন শ্রমিকরা সারা জেলায় সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে।
জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক জানান, সুনামগঞ্জ বাস টার্মিনালে লোকাল বাসের জায়গা হয় না এরমধ্যে আন্তঃজেলা বাস রয়েছে ৮০টিরও বেশি। এ বাসগুলো টার্মিনালে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা বাসটার্মিনালের পুকুর ভরাট করে টার্মিনাল বড় করার দাবি করছি।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার এহসান শাহ্ বলেন, আইনশৃঙ্খলা সভাসহ বিভিন্ন সভায় বিষয়টি বারবার আলোচনা হয়। সড়কের ওপরে বাস রাখায় জনসাধারণের ভোগান্তি হয়, সড়কে তৈরি হয় যানজট। এ অবস্থায় ট্রাফিক কন্ট্রোলের জন্য তিনটি বাস পুলিশ লাইন্সে এনে রাখা হয়েছে। এ কারণে ধর্মঘট ডেকে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলা যুক্তিযুক্ত হবে না।