সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:১২ পিএম
প্রতীকী ছবি
বৈশ্বিক করোনা মহামারির রেশ কাটতে না কাটতেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এ অবস্থায় সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থনৈতিক মন্দা, ডলারের দরপতন, খাদ্যপণ্যের সরবরাহ কমে যাওয়া এবং সব ধরনের জ্বালানি সংকটে বেশিরভাগ দেশ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থাও অনেক খারাপ। এরই মাঝে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারায় ঋণের টাকায় বড় বড় অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বৈদেশিক ঋণের বোঝা দেশজুড়ে সব শ্রেণির মানুষের মাঝে ভয়, আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার বেড়াজাল তৈরি করেছে।
দেশের সচেতন নাগরিকসহ অর্থনীতিবিদরা বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করছেন। তারা সরকারকে নানাভাবে সাবধান করছেন এবং পরামর্শ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের পাঁচটি মেগা প্রকল্পের ঋণ শোধ করার সময় শুরু হবে ২০২৭ সাল থেকে। টাকা ছাপিয়েও এই ঋণ শোধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত। ওই সময় যদি দেশে বৈদেশিক মুদ্রা না থাকে, তাহলে পেছনে ফিরে বলতে হবে ভুল করেছিলাম। জাতীয় প্রেসক্লাবে অ্যাসোসিয়েশস ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এলআরডি) আয়োজিত ‘খাদ্য নিরাপত্তা, ক্ষুদ্র কৃষকদের সংকট ও সমবায়ের গুরুত্ব’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে ক্যানসার, কিডনি, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা এত ব্যয়বহুল যে, সাধারণ মানুষের এ ধরনের রোগ হলে ওই পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। এসব রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে প্রত্যেক বছর ৫০ লাখ মানুষ দরিদ্র হন। এভাবে আগামী ২-১ বছর চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত স্তর আর থাকবে না। নিম্ন-মধ্যবিত্তের ক্ষতি ইতোমধ্যে হয়েছে। তবে উচ্চ মধ্যবিত্তের তেমন কিছু হবে না।’
বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও রিজার্ভ সংকটের সূত্র ধরে আবুল বারকাত বলেন, ‘ভবিষ্যতে দেশের অবস্থা ভালো হবে, রিজার্ভ ভালো হবে- আমি এ ধরনের কথার সঙ্গে একমত নই। ঝুঁকি পরিমাপ করা যায়, ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়।
কিন্তু অনিশ্চয়তা পরিমাপ বা ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। দ্রব্যমূল্য অনিশ্চয়তার বিষয়। চালের কেজি ১৫০ টাকা হতে পারে।’
ঋণের টাকা পরিশোধের বিষয়ে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে কেউই ইতিবাচক কিছু বলেননি। ঋণের টাকা কীভাবে শোধ হবে সেটা নিয়ে সরকারের জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পনা করা দরকার এবং এ বিষয়ে করণীয় কী হতে পারে সে বিষয়েও বাস্তব পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে।