বিজয়ের ৫ দিন পর বাংলাদেশের পতাকা উড়ে নাটোরে

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:০৫ এএম | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:১২ এএম

নাটোরে তৎকালীন গভর্নর হাউসে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণ। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরে তৎকালীন গভর্নর হাউসে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণ। ছবি: সংগৃহীত

আজ ২১ ডিসেম্বর নাটোর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকা হানাদার মুক্ত হলেও, এ জেলায় বিজয়ের পতাকা উড়ে আরো ৫ দিন পর। কারণ নাটোর ছিল পাকিস্তানি হানাদারদের ২নং সেক্টরের হেডকোয়ার্টার। এখান থেকেই দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে যুদ্ধ পরিচালনা করত পাকিস্তানী বাহিনী।

২১ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত পুরো নাটোর ছিল তাদের দখলে। জেলার তৎকালীন গভর্নর হাউস (বর্তমানে উত্তরা গণভবন) ছাড়াও আনসার হেডকোয়ার্টার, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ, রাজবাড়ী, পিটিআই ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ছিলো হানাদার সেনাদের নিরাপদ ঘাঁটি। মুক্তিযুদ্ধে নাটোরে বড় ধরনের কোনো লড়াই না হলেও, একাধিক স্থানে চালানো হয় গণহত্যা।

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা নাটোর সদর উপজেলার ফুলবাগান, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি, শুকোলপট্টি, মলিকহাটি, ফতেঙ্গাপাড়া, ছাতনী, দত্তপাড়া, বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ী, সিংড়ার হাতিয়ানদহ, কলম এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগারমিল চত্বরে গণহত্যা চালায়।

দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান হানাদারমুক্ত হলেও নাটোরমুক্ত হয় ২১ ডিসেম্বর। ২১ ডিসেম্বর তৎকালীন গভর্নর হাউস বর্তমান উত্তরা গণভবনে মিত্র বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে পাকিস্তানি সেনা গ্যারিসনের টু আইসি ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার, জেসিও এবং মিলিশিয়াসহ প্রায় সাড়ে ৭ হাজার সৈন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে।

এ সময় নাটোর সেনা গ্যারিসনের কমান্ডেন্ট মেজর জেনারেল নজর হোসেন শাহ ও মিত্র বাহিনীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডেন্ট লে. জেনারেল লছমন সিং। আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণের পর পাকিস্তানি সেনাদের ট্যাংক, কামানসহ প্রায় ১১ হাজার অস্ত্র মিত্র বাহিনীর হস্তগত হয়। আত্মসমর্পণের খবর ছড়িয়ে পড়লে, ওই দিন বিকেলে আনন্দে সাধারণ মানুষ জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শোভাযাত্রা সহকারে শহরের মাদ্রাসা মোড়ে অবস্থিত বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ভবানীগঞ্জ মোড়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজন রয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh