একসাথে ৯ সন্তানের জন্ম দিয়ে গিনেস বুকে হালিমা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:২১ এএম | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৪৪ এএম

সন্তান জন্মের ১৯ মাস পর গত সপ্তাহে অবশেষে তারা বাড়ি ফিরেছেন। ছবি: সংগৃহীত

সন্তান জন্মের ১৯ মাস পর গত সপ্তাহে অবশেষে তারা বাড়ি ফিরেছেন। ছবি: সংগৃহীত

মাঝে মাঝেই একসাথে পাঁচ, ছয়, সাত সন্তান প্রসবের খবর শোনা যায়। আপাতদৃষ্টিতে এই খুশির খবরগুলোর শেষ পরিণতি ভালো হয় না। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চাগুলোর মৃত্যু হয় কয়েকদিনের মধ্যে।  

তবে মালির এক দম্পতির ঘরে একসাথে জন্ম নেওয়া ৯ সন্তানের বয়স দেখতে দেখতে ১৯ মাসে দাঁড়িয়েছে। আর এ কারণে তাদের নাম উঠে গেছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে।

গিনেস বলছে, এই প্রথম ননুপ্লেটস (একসাথে একই গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ নয় সন্তান) বা নয় জমজের জন্ম হল, যেখানে মা এবং শিশুরা জীবিত আছে। গিনেসের রেকর্ড অনুযায়ী এর আগে কোনো ননুপ্লেটস কয়েক ঘণ্টার বেশি বাঁচেনি। তাই ননুপ্লেটসের জন্ম নেওয়া ও বেচেঁ থাকা একটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা।   

এই ৯ সন্তানের বাবা ও মায়ের নাম আবদেল কাদের আরবি ও হালিমা সিসে। আবদেলকাদের ও হালিমা মালির মানুষ হলেও বিরল এই নবমজের জন্ম ও চিকিৎসার জন্য তাদের যেতে হয়েছিল মরক্কোতে। সন্তান জন্মের ১৯ মাস পর গত সপ্তাহে অবশেষে তারা বাড়ি ফিরেছেন।  

হালিমা সিসে বলছেন, এদের একসাথে ঘুম পাড়ানো সহজ কাজ না। বিছানায় নিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখা লাগে। এভাবে ঘুমানোটা পছন্দ ওদের।  

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নাদিয়া সুলেমান একসাথে আট সন্তানের জন্ম দিয়ে (বাচ্চাদের বেঁচে থাকার ভিত্তিতে) রেকর্ড গড়েছিলেন। ২০০৯ সালের ওই ঘটনায় নাদিয়া ‘অক্টোমম’ উপাধি পেয়েছিলেন। 

আবদেল কাদের বলছেন, আমরা ৭টার কথা জেনেছিলাম, আল্লাহ আমাদের ৯টা বাচ্চা উপহার দিয়েছে।  

প্রথমে মালির ডাক্তাররা ভেবেছিলেন যে হালিমার গর্ভে সাতটি সন্তান রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য এরপর তাকে মরক্কোর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতালে নেওয়ার পর দেখা যায়- হালিমার পেটে আরও দুটি, অর্থাৎ মোট ৯টি সন্তান। 

গর্ভাবস্থার ৩০ সপ্তাহের মাথায় অপরিপক্ক (প্রিম্যাচিউর) অবস্থায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাঁচটি মেয়ে শিশু ও চারটি ছেলে শিশুর জন্ম দেন হালিমা। শিশুগুলোর ওজন ছিল ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মধ্যে। 

এই শিশুদের জীবন নিয়ে ঝুঁকি থাকার কারণে তাদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। তারা এই ১৯ মাস বিশেষভাবে সজ্জিত একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন যেখানে নার্সরা তাদের সার্বক্ষণিক সহায়তা করতো।  

যে হাসপাতালে বিরল এই ঘটনা ঘটেছে সেই হাসপাতালে পরিচালক রশদি তালিব বলছেন, প্রসবপরবর্তী রক্তক্ষরণ ঠেকাতে কোনোভাবেই যেন দেরি না হয় সেটা মাথায় রেখে আমাদের মায়ের দিকে নজর দিতে হয়েছে আগে। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে আমাদের টেকনিক্যাল রিসোর্স ও যোগ্যতাসম্পন্ন স্টাফ ছিল। সর্বমোট ৩২ জন এর পেছনে কাজ করেছেন।  

হাসপাতালের এই কর্মীদের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ আবদেলকাদের ও হালিমা। এই ৯টি ছাড়াও তাদের চার মাস বয়সী আরও একটি মেয়ে রয়েছে, যার নাম সৌদা।  

আবদেল কাদের বলেন, সর্বশক্তিমানের পরে, আমার দেশ মালির কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানাই, যারা ফলোআপ এবং সমস্ত খরচের ব্যবস্থা করেছে।  

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh