নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৪৩ পিএম | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৪৬ পিএম
বিজয় মেলার নামে মাদক ব্যবসা ও অশ্লীল নৃত্য। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কবিরহাটের জগদানন্দ গ্রামে বিজয় মেলার নামে মাদক ব্যবসা ও অশ্লীল নৃত্যে আসর চালানোর অভিযোগ উঠেছে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মুনাফ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক কামাল উদ্দিন বাবুলের বিরুদ্ধে। আর দর্শক সারিতে ভিড় বাড়ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে মাদক ব্যবসা ও এ নগ্ন নৃত্যের আসর চলছে। ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানি এ মেলার উদ্বোধন করেন।
গতকাল সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে মুকবুল চৌধুরী হাট বিজয় মেলায় গিয়ে দেখা যায়, মেলায় রয়েছে নামসর্বস্ব ১৫-২০টি দোকান। মেলার মূল আকর্ষণ হলো নগ্ননৃত্যের আসর। রাত ১১টার থেকে উঠতি বয়সী স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আর গ্রাম্য যুবকদের উপচেপড়া ভিড়। নগ্ন নৃত্য চলাকালে মুঠোফোনে ভিডিও এবং ছবি ধারণ একেবারেই নিষিদ্ধ। মুঠোফোনে ভিডিও এবং ছবি ধারণ করলে মেলা কমিটির লোকজন ছিনিয়ে নেয় মুঠোফোন। এসব বিষয়ে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানির কাছে স্থানীয় এলাকাবাসী একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি।
জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুকবুল চৌধুরী হাট বিজয় মেলার অনুমোদন নেয় মেলা আয়োজক কমিটি। মেলায় তারা যাত্রাপালার অনুমোদন নিলেও রাতের আঁধারে চলছে নগ্ন নৃত্য আর ভ্রাম্যমাণ বেচাকেনা চলছে চোলাই মদ-ইয়াবা ও গাঁজা। মেলা আয়োজক কমিটির একাধিক সদস্য জানান, কবিরহাট থানার পুলিশের সাথে চুক্তি হয়েছে মঙ্গলবার রাত থেকে মেলায় ১২টি জুয়ার আসর বসবে। ১৬ ডিসেম্বর থেকে মেলা শুরু হয়েছে বলে মেলা পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শরিয়ত উল্যাহ সাইমুন জানান, মেলায় প্রথম দিন থেকেই চলছে অশ্লীল নাচ-গান। তাতে উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকেরা নষ্ট হতে বাধ্য। অনেক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিয়মিত যাত্রা দেখতে যায়। এ জন্য তারা পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেলা আয়োজন কমিটির সহ-সভাপতি আবদুল মান্নান মুনাফ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বাবুল বলেন, গতকাল আমরা মেলায় ছিলাম না। যদি আপত্তিকর কিছু হয়ে থাকে থা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানি বলেন, আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেবারে জানি না বললে ভুল হবে। আমি মন থেকে মেলা পরিচালনার সাথে জড়িত নেই। দায়িত্বে থাকার কারণে অনেক কিছুতে আমাকেও দোষারোপ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত জুয়ার কোন আসর বসেনি। জুয়ার আসর বসলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে, এলাকাবাসী নগ্ন নৃত্য চলার বিষয়ে তার কাছে অভিযোগ করার সত্যতাও নিশ্চিত করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, গত দুই দিন আগে আমি নতুন এসেছি এই থানায়। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নিবেন।